ইরানের সঙ্গে সৌদি আরব কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করায় পারস্য উপসাগরীয় আরব দেশগুলোর বিমান পরিবহন সংস্থাগুলো চরম ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। এরইমধ্যে এসব এয়ারলাইনের ক্ষতি হয়েছে কোটি কোটি ডলার।
প্রখ্যাত সৌদি শিয়া আলেম শেখ নিমরের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর এবং তেহরানের পক্ষ থেকে তার তীব্র প্রতিবাদের জের ধরে ইরানের সঙ্গে কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিন্ন করে সৌদি আরব। দেশটির দেখাদেখি বাহরাইনও তেহরান থেকে তার দূতাবাস গুটিয়ে নেয়।
তেহরানের সঙ্গে রিয়াদের সব ধরনের সম্পর্ক ছিন্ন করার ফলে ইরান থেকে সৌদি আরবে ওমরাহ হজ্ব করতে যাওয়া বন্ধ হয়ে গেছে। সেইসঙ্গে সৌদি আরব ও বাহরাইন থেকে ইরানের পবিত্র স্থানগুলো জিয়ারত করতে আসাও বন্ধ করে দিয়েছেন শিয়া মুসলমানরা।
প্রতি বছর লাখ লাখ ইরানি নাগরিক সৌদি আরবে ওমরা হজ্ব করতে যেত। এখন তাদের সে সফর বাতিল হওয়ায় অর্থনৈতিকভাবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে রিয়াদ।
এ ছাড়া, এতদিন ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় তেহরান থেকে সৌদি আরব অভিমুখী এবং সৌদি আরব ও বাহরাইন থেকে তেহরান অভিমুখী বেশিরভাগ ফ্লাইট পরিচালনা করতো পারস্য উপসাগরীয় আরব দেশগুলোর এয়ারলাইনগুলো।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, প্রতি সপ্তাহে ইরান ও সৌদি আরবের মধ্যে পরিচালিত প্রায় ১৫০টি সরাসরি ফ্লাইটে এতদিন হাজার হাজার হজ্বযাত্রী চলাচল করছিল।
সৌদি আরবের সরকারি হিসাবে বলা হচ্ছে, ২০১৫ সালে সেদেশের রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত সৌদিয়া এয়ারলাইন্স তিন লাখ ৫০ হাজার ইরানি হজ্বযাত্রীকে পরিবহন করেছে। তেহরান-জেদ্দা রুটের একটি ফিরতি টিকেটের দাম ৫৫০ ডলার হিসেবে ধরলে এসব হজ্বযাত্রী বাবদ ‘সৌদিয়া’ আয় করেছে ১৯ কোটি ২৫ লাখ ডলার।
এদিকে সৌদি আরবের কমদামী এয়ারলাইন ‘ফ্লাইনাস’ ২০১৬ সালে এক লাখ ইরানি হজ্বযাত্রী পরিবহনের অনুমতি পেয়েছিল। কিন্তু এয়ারলাইনটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা পল বিরনি জানিয়েছেন, ওই পরিকল্পনা বাতিল করে দিতে হয়েছে। এতে তাদের ছয় কোটি ২০ লাখ ডলার ক্ষতি হয়েছে।
এদিকে এতদিন মানামা-তেহরান রুটে সপ্তাহে ১৬টি ফ্লাইট চালাতো বাহরাইনের গালফ এয়ার। কিন্তু সম্পর্ক ছিন্ন করায় যাত্রীর অভাবে এসব ফ্লাইট বন্ধ করে দেয়ার উপক্রম হয়েছে। এই দুই দেশের এয়ারলাইনগুলো ছাড়াও কুয়েত, কাতার ও আরব আমিরাতের বিমান পরিবহন সংস্থাগুলিও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে জানা গেছে।