প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জনপ্রশাসনে আধুনিক তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধির প্রশংসা করে বলেছেন, আধুনিক, গতিশীল ও উদ্ভাবনীমূলক জনপ্রশাসনই দেশকে উন্নয়নের সর্বোচ্চ শিখরে নিয়ে যেতে পারে।
তিনি বলেন, ‘বিশ্বের উন্নত দেশের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে দ্রুত, উন্নততর ও সহজলভ্য সেবা দিতে হলে আমাদেরকে আরও বেশি দক্ষতা অর্জন করতে হবে।’
শেখ হাসিনা বলেন, আমি মনে করি জনপ্রশাসনের প্রতিটি সদস্যের সে দক্ষতা রয়েছে। আমরা দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য দেশে-বিদেশে প্রশিক্ষণেরও ব্যবস্থা করেছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা চাই জনগণ সেবার জন্য ঘুরবে না, সরকার জনগণের দোরগোড়ায় সেবা পৌঁছে দেবে’।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবার সকালে ‘উন্নয়ন উদ্ভাবনে জনপ্রশাসন-২০১৬’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সামিটের উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির ভাষণে একথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ‘এক্সেস টু ইনফরমেশন’ (এটুআই ) প্রকল্পের উদ্যোগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নভোথিয়েটারে সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ ও রূপকল্প-২০২১ বাস্তবায়নের বিভিন্ন উদ্ভাবন, দেশীয় ও আন্তর্জাতিক মহলে তুলে ধরার জন্য এই সামিটের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন জনপ্রশাসন মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান এবং ইউএনডিপি’র কান্ট্রি ডিরেক্টর পলিন টেনাসিস।
মন্ত্রী পরিষদ সচিব মো.শফিউল আলম সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে আরও বক্তৃতা করেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো.আবুল কালম আজাদ । প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ‘এটুআই’ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মহাপরিচালক কবির বিন আনোয়ার অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তৃতা করেন।
অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত,শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদসহ মন্ত্রী পরিষদ সদস্যবৃন্দ,প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা,সংসদ সদস্যবৃন্দ, সরকারের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাগণ,জেলা প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনারবৃন্দ,স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাবৃন্দ, মালদ্বীপ ও ভ’টানের মন্ত্রীবৃন্দ, কূটনৈতিক মিশনের সদস্যবৃন্দ,বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতগণ এবং উন্নয়ন সহযোগী দেশের সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে সব্যসাচি লেখক সৈয়দ শামসুল হকে পরিচালনায় এবং জাপানি একটি প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং বাঙালির স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসের ওপর নির্মিত ৩০ মিনিটের একটি থ্রিডি চলচ্চিত্র প্রদর্শন করা হয়। এছাড়া,দেশকে বর্তমান সরকারের ডিজিটালাইজেশনে রূপান্তরের তথ্যচিত্র নিয়ে ‘রপান্তরের গল্প’ (টেল অব ট্রান্সফর্মেশন) প্রদর্শিত হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আধুনিক, গতিশীল ও উদ্ভাবনমূলক জনপ্রশাসনই পারে একটি দেশকে উন্নয়নের সর্বোচ্চ শিখরে তুলে ধরতে। আমাদের জনপ্রশাসনের প্রতিটি স্তর আজ সে লক্ষ্যেই কাজ করে যাচ্ছে।
‘বিশ্বের উন্নত দেশের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে দ্রুত, উন্নততর ও সহজলভ্য সেবা দিতে হলে আমাদেরকে আরও বেশি দক্ষতা অর্জন করতে হবে’বলেও প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন,আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি- জনপ্রশাসনের সদস্যরা তথ্য-প্রযুক্তি, জ্ঞান-বিজ্ঞান, মেধা ও অর্জিত অভিজ্ঞতার সর্বোচ্চ ব্যবহার করে নতুন নতুন উদ্ভাবনী পদ্ধতি ও কৌশল আয়ত্ব করছে।
শেখ হাসিনা বলেন, আমরা চাই জনগণ সেবার জন্য ঘুরবে না, সরকার জনগণের দোরগোড়ায় সেবা পৌঁছে দিবে।
জনপ্রশাসনের প্রতিটি ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার কোন বিকল্প নেই, এ কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন,আমার দৃঢ় বিশ্বাস- আপনারা সকলে মিলে একবিংশ শতকের উপযোগী আধুনিক, সেবামুখী একটি চৌকষ জনপ্রশাসন গড়ে তুলবেন।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহারের ক্ষেত্রে দেশের ৬৪টি জেলার মধ্যে ব্রাক্ষণবাড়িয়া,যশোর এবং চট্টগ্রাম-এই তিন জেলাকে শ্রেষ্ঠ জেলার এবং শ্রেষ্ঠ বিভাগ হিসেবে ঢাকাকে সন্মাননা প্রদান করেন।
তিন জেলার জেলা প্রশাসক যথাক্রমে ড.মো.মোশাররফ হোসেন,ড.মো. হুমায়ুন কবির এবং মো.মেজবাহ উদ্দিন নিজ নিজ জেলার পক্ষে প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে সন্মাননা ক্রেষ্ট গ্রহণ করেন। বিভাগগুলোর মধ্যে শ্রেষ্ঠ ঢাকা বিভাগের পক্ষে বিভাগীয় কমিশনার হেলাল উদ্দিন আহমদ প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে সন্মাননা ক্রেষ্ট নেন।
প্রধানমন্ত্রী তাঁর বক্তৃতায় বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকার জনগণের সরকার। সমতাভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণই আমাদের একমাত্র লক্ষ্য। আর “ডিজিটাল বাংলাদেশ” সেই লক্ষ্য অর্জনের চাবিকাঠি।
জাতির পিতা তাঁর সাড়ে তিন বছরের সরকারে বাংলাদেশকে উন্নয়নের ভিত্তির উপর দাঁড় করিয়ে দিয়ে গেছেন-এ কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন,জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ গড়ে তুলতে উদ্ভাবনী চিন্তা ও তথ্য-প্রযুক্তির বিকাশকে প্রধান্য দিয়েছিলেন। জাতির পিতা দেশের প্রথম শিক্ষা কমিশনের দায়িত্ব দিয়েছিলেন ড. কুদরত-ই-খুদার মত বিজ্ঞানীর হাতে। তিনি বেতবুনিয়ায় দেশের প্রথম ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্র স্থাপন করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতার এসকল পদক্ষেপই আমাদের ডিজিটাল বাংলাদেশের ভিত্তি।
‘উন্নয়ন উদ্ভাবনে জনপ্রশাসন-২০১৬’ এই আন্তর্জাতিক সামিট অত্যন্ত সময়োপযোগী একটি আয়োজন মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী এ সময় বলেন, এর মাধ্যমে দেশের উন্নয়নে নতুন নতুন উদ্ভাবনী কৌশল গ্রহণ ও বাস্তবায়নে জনপ্রশাসনের প্রতিটি কর্মী আরও উৎসাহিত হবেন।
তিনি ’৯৬ পূর্ববর্তী সময়ে দেশে তথ্য প্রযুক্তি,কম্পিউটার ব্যবহারের স্মৃতি রোমন্থন করে বলেন,‘আমরা যখন ১৯৯৬ সালে সরকার গঠন করি তখন সবকিছুই চলত এনালগ স্টাইলে। ইন্টারনেট তো দূরের কথা কম্পিউটার ব্যবহার করার বিষয়েও ছিল অনেকেরই অনীহা। আমার কাছে মন্ত্রণালয় থেকে যে ফাইলগুলো আসতো তা ছিল টাইপ মেশিনে টাইপ করা, কম্পিউটার যাও ছিল তাও পড়ে থাকতো শোপিসের মত।’
সে সময় একটি কম্পিউটারের লেজার প্রিন্টারসহ মূল্য প্রায় সাড়ে ৩ লাখ টাকা ছিল উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সন্ত্রান সজীব ওয়াজেদ জয়ের কাছ থেকেই তিনি কম্পিউটার প্রশিক্ষণ পেয়েছেন,কম্পিউটার এক্সেসরিজের ট্যাক্স কমিয়ে এটি জনগণের নাগালের মধ্যে দেয়া হয় তাঁরই পরামর্শে। এমনকি ‘ডিজিটাল’ শব্দটিও তাঁর তথ্য প্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের দেয়া বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী দেশের সকল ল্যান্ডফোনকে ডিজিটালে রূপান্তর বিএনপি’র এক প্রভাবশালী মন্ত্রীর মনোপলি ভেঙ্গে মোবাইল ফোনকে ব্যক্তি সেক্টরে উন্মুক্ত করে দেয়া সহ তথ্য প্রযুক্তিকে সহজলভ্য এবং মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে নিয়ে আসায় তাঁর সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরেন।
তিনি বলেন,‘আমার বলতে দ্বিধা নেই, এ ব্যাপারে আমাকে পরামর্শ দিয়েছে, শিক্ষা দিয়েছে আমার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়। তার পরামর্শ ছিল আমরা যেন কম্পিউটার ও যন্ত্রাংশের উপর ট্যাক্স কমিয়ে দেই। তাহলেই এগুলো সার্বজনীন হবে। আমি জয়ের পরামর্শ মোতাবেক তাই-ই করলাম। সেইসাথে সাবমেরিন কেবল স্থাপন করার সিদ্ধান্ত নেই।’
বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার বিনা খরচে সাবমেরিন ক্যাবলের আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্কে বাংলাদেশকে যুক্ত করার সুযোগ হাতছাড়া করেছিল- এ কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সাবমেরিন ক্যাবলের আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্কে যুক্ত না হবার কারণ হিসেবে তারা বলেছিল এ সংযোগ নিলে বাংলাদেশের সকল তথ্য চুরি হয়ে যাবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৯ সালে আমরা আবার সরকার গঠন করি। আমাদের নির্বাচনী মেনিফেস্টোর অন্যতম অঙ্গীকার ছিল ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ বাস্তবায়ন। ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ শব্দটি আমার ছেলে জয়ই আমাদেরকে উপহার দিয়েছে। তারই পরামর্শে ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে আমরা কাজ শুরু করি। এটি এখন আর স্বপ্ন নয়, বাস্তবতা।
তিনি বলেন, আমরা সারা দেশে ৫ হাজার ২৭৫টি ডিজিটাল সেন্টার স্থাপন করেছি। এখান থেকে ২০০ প্রকার ই-সেবা দেওয়া হচ্ছে। দেশের সকল উপজেলায় অপটিক্যাল ফাইবার কানেকটিভিটি চালু করা হয়েছে। ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে পারস্পরিক যোগাযোগ দ্রুত ও সহজতর হয়েছে।
‘আমরা ইন্টারনেট ডেনসিটি ও সাবমেরিন ক্যাবলের ক্যাপাসিটি বৃদ্ধি করেছি’ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশে তথ্য-প্রযুক্তিবান্ধব নীতি প্রণয়ন করা হয়েছে। দেশের ৯৯ ভাগ এলাকা এখন মোবাইল নেটওয়ার্কের আওতায় এসেছে। দেশে ৩-জি প্রযুক্তির মোবাইল নেটওয়ার্ক চালু করা হয়েছে। ৪-জি প্রযুক্তিও অচিরেই চালু করা হবে।
প্রধানমন্ত্রী সারা দেশে তাঁর সরকারের জিজিটাইজেশনের চিত্র তুলে ধরে বলেন, আমরা ২৫ হাজারেরও বেশি ওয়েবসাইট নিয়ে ‘জাতীয় তথ্য বাতায়ন’ চালু করেছি। এছাড়া ১ হাজার ৫০০ এর বেশি সরকারি ফরম নিয়ে চালু করা হয়েছে ফর্ম পোর্টাল।
তিনি বলেন, তাঁর সরকার ‘মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম’ ও ‘শিক্ষক কর্তৃক ডিজিটাল কনটেন্ট তৈরি’ নামে দুটি মডেল উদ্ভাবন করেছে। দেশের ২৩ হাজার ৩৩১টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং ৪ হাজার ৫০০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম স্থাপন করা হয়েছে। ১০ হাজার বিষয়ে ১ লক্ষ পৃষ্ঠার কনটেন্ট নিয়ে জাতীয় ই-তথ্যকোষ তৈরি করা হয়েছে।
তাঁর সরকার ৩০০টি পাঠ্যপুস্তক এবং ১০০টির বেশি সহায়ক বই ই-বুকে রূপান্তর করেছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘মুক্তপাঠ’ নামে বাংলা ভাষায় নির্মিত একটি উন্মুক্ত ই-লার্নিং প্লাটফর্ম চালু করা হয়েছে। দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য তৈরি করা হয়েছে ‘একসেসিবল মাল্টিমিডিয়া টকিং বুক’।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়সহ ২০টি মন্ত্রণালয়, ৪টি অধিদপ্তর এবং ৬৪টি জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ও ৭টি বিভাগীয় কমিশনার অফিসে ‘ই-ফাইলিং সিস্টেম’ চালু এবং দেশের সকল ভূমি রেকর্ড (খতিয়ান) ডিজিটাল করার কাজ চলছে বলেও প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন।
চিকিৎসা সেবাকে প্রযুক্তির মাধ্যমে জনগনের দোড়গোড়ায় নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে তাঁর সরকারের উদ্যোগ সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বিনামূল্যে স্বাস্থ্য পরামর্শ নেওয়া যাচ্ছে। টেলিমেডিসিনের মাধ্যমে রোগী শহরের হাসপাতালে না এসেও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে পারছেন।
তিনি বলেন,কৃষক এবং কৃষি সম্পর্কিত সেবা ও তথ্য প্রদানের জন্য দেশের প্রথম সরকারি কলসেন্টার হিসাবে ‘কৃষি কলসেন্টার’ চালু করা হয়েছে। আমরা ৪০০টি ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারে এজেন্ট ব্যাংকিং চালু করেছি। ১৮ লক্ষ নাগরিক ই-টিআইএন ব্যবহার করছে। ১ হাজার ৩৩৩টি পোস্ট অফিসে পোস্টাল ক্যাশকার্ড, ২ হাজার ৭৫০টি পোস্ট অফিস ও সাব-পোস্ট অফিসে ইলেক্ট্রনিক মানি অর্ডার চালু করা হয়েছে। প্রায় ৮ হাজার ৫০০ পোস্ট ই-সেন্টার প্রতিষ্ঠার কাজ চলছে।
তাঁর সরকার ইলেকট্রনিক চিপ সম্বলিত স্মার্ট ড্রাইভিং লাইসেন্স কার্ড প্রদান করেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মোটরযানের ট্যাক্স ও ফি অনলাইনে প্রদান করা হচ্ছে। রেলওয়েতে ই-টিকিটিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিভিন্ন ইউটিলিটি বিল পরিশোধ, অনলাইনে হজ্জ¦ ব্যবস্থাপনাসহ বিভিন্ন ধরনের নাগরিক সেবা আমরা অনলাইনে প্রদান করছি।
প্রধানমন্ত্রী জনপ্রশাসনে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারিদের উদ্দেশ্যে বলেন,ডিজিটাল বাংলাদেশ ও রূপকল্প ২০২১ এর বাস্তবায়নে মুখ্য ভূমিকা পালন করছেন আপনারাই।
তিনি বলেন, উদ্ভাবনকে পৃষ্ঠপোষকতা করতে আমরা ‘ইনোভেশন ফান্ড’ তৈরি করেছি। এ পর্যন্ত সার্ভিস ইনোভেশন ফান্ডের আওতায় ১০৩টি প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে। ১৯ কোটি ৮৯ লাখ টাকারও বেশি অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। উদ্ভাবনী সংস্কৃতিকে বেগবান করতে ‘আইডিয়া ব্যাংক’ নামে একটি উদ্ভাবনী প্লাটফর্মও আমরা চালু করেছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের রয়েছে বিশাল মানবসম্পদ। তথ্য-প্রযুক্তির সাথে এই মানবসম্পদকে সম্পৃক্ত করতে হবে। সরকারের উন্নয়ন কর্মকা-ে নাগরিকদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। তবেই আমরা কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারব।
দেশের পুরাতন জঙ্গি সমস্যা নতুন করে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে উল্লেখ প্রধানমন্ত্রী বলেন, আধুনিক তথ্য প্রযুক্তির অপব্যবহার করে তারা ফায়দা লুটছে। এ বিষয়ে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, এ দেশটি আমাদের সকলের। আসুন তথ্য-প্রযুক্তির সর্বোত্তম ব্যবহার করে আমরা দেশের উন্নয়নের জন্য আরও নতুন নতুন বিষয় উদ্ভাবন করি। আগামী প্রজন্মের জন্য আমাদের বর্তমানকে উৎসর্গ করি।
প্রধানমন্ত্রী এ সময় বাংলাদেশকে দারিদ্রমুক্ত এবং উন্নত করে গড়ে তুলতে তাঁর রাজনৈতিক অঙ্গীকার-রূপকল্প ২০২১ বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশকে একটি মধ্যম আয়ের দেশ এবং রূপকল্প ২০৪১ বাস্তবায়নের মাধ্যমে একটি উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সকলের সহযোগিতা কামণা করেন।
প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানের শেষে ‘উন্নয়ন উদ্ভাবনে জনপ্রশাসন-২০১৬’ শীর্ষক সামিট উপলক্ষ্যে আয়োজিত বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখেন।বাসস