রবীন্দ্র সংগীতের উজ্জ্বল নক্ষত্র ওস্তাদ মিহির নন্দী পাচ্ছেন এবারের শিল্পকলা পদক। আগামী ৫ মে ঢাকায় রাষ্ট্রপতির হাত থেকে পদক গ্রহণ করবেন তিনি।
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির পদক প্রদান কমিটির সভায় গত ১৫ মার্চ কণ্ঠসংগীতে বিশেষ অবদানের জন্য মিহির নন্দীকে শিল্পকলা পদক-২০১৫ এর জন্য মনোনীত করা হয়। শিল্পকলার মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকি স্বাক্ষরিত চিঠিতে মিহির নন্দীকে এ খবর জানানো হয়েছে। ২০১৩ সাল থেকে কণ্ঠসংগীত, নৃত্যকলা, যন্ত্রসংগীত, চারুকলা, নাট্যকলা, আবৃতি ও লোকসংগীতে বিশেষ অবদানের জন্য পদক প্রদান করে আসছে শিল্পকলা।
পদকপ্রাপ্তির প্রতিক্রিয়ায় সংগীত সাধক মিহির নন্দী জানান, এ খবরে সত্যিই ভাল লেগেছে। মনে হয়েছে, কেউ যদি একাগ্রচিত্তে কাজ করে তাহলে তার প্রতিদান ঠিকই পায়। ছাত্র-ছাত্রী ও নবীন সংগীত শিল্পীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, নিবিষ্টমনে সাধনা করে যাও, নিজের কথা নয়, শুধু দেশ ও সমাজের কথা ভেবে কাজ করো একদিন স্বীকৃতি পেয়ে যাবে।
বাণী ও সুরে আত্মনিমগ্ন থাকেন ৫২ বছর বয়সী এই সাধক। চট্টগ্রামের সকল শিল্পী-বোদ্ধা শ্রদ্ধাবনত চিত্তে প্রণাম করেন সংগীতের এই জীবন্ত কিংবদন্তী মিহির নন্দীকে। তার কাছ থেকে তালিম নেয়া সংগীত শিল্পীরা আজ রবীন্দ্র সংগীতের সুরের ধারা উজ্জীবিত রেখেছে।
১৯৪৫ সালের ১৪ ডিসেম্বর চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার কেউচিয়া গ্রামে জন্ম নেন মিহির নন্দী। সংগীতে তার হাতেখড়ি বাবা ফনীন্দ্র লাল নন্দীর কাছেই। রবীন্দ্র সংগীতের শিক্ষাগুরু ওয়াহিদুল হক ও আচার্য শৈলদা রঞ্জন মজুমদার। ছোটবেলা থেকে গান করলেও মিহির নন্দী আনুষ্ঠানিক শিল্পী হন ১৯৬৪ সালে চট্টগ্রাম বেতারে তালিকাভূক্ত হয়ে। উচ্চাঙ্গ সংগীত ও রবীন্দ্র সংগীতে শিক্ষকতা শুরু করেন ১৯৬৬ সালে। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ বেতার ও বিটিভির বিশেষ শ্রেণির শিল্পী, সংগীত পরিচালক, সুরকার ও অডিশন বোর্ডের সদস্য। রবীন্দ্র সংগীত মিহির নন্দীর ধ্যান-জ্ঞান হলেও আধুনিক, নজরুল ও অতুল প্রসাদ ছাড়াও উচ্চাঙ্গ সংগীতে বিশেষ দক্ষতা রয়েছে। বর্তমানে তিনি আনন্দ ধ্বণী’র অধ্যক্ষ, রবীন্দ্রসংগীত সম্মিলন পরিষদের সহ-সভাপতি ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের খণ্ডকালীন শিক্ষক।
মিহির নন্দী স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রর অন্যতম কণ্ঠসৈনিক। একাত্তরে ভারতে গিয়েও মুক্তিযোদ্ধা শিল্পী সংসদের মাধ্যমে ক্যাম্পে ক্যাম্পে উদ্দীপনামূলক গান পরিবেশন করেছেন।