রবিবার সন্ধ্যায় গুজরাটের মোরবিতে ব্রিটিশ আমলের একটি সেতু ভেঙে অন্তত ১৪১ জনের মৃত্যু হয়েছে। প্রায় ১৭৭ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে এবং বিভিন্ন উদ্ধারকারী দলগুলি এখনও নিখোঁজ মানুষের সন্ধান চালিয়ে যাচ্ছে। যখন এই ঝুলন্ত ব্রিজের তাঁর ছিঁড়ে যায় তখন নারী ও শিশুসহ প্রায় ৫০০ লোক ছিলেন ব্রিজের উপরে। ব্রিজ ভেঙে নদিতে পরে যান তাঁরা। আহমেদাবাদ থেকে ৩০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ১৫০ বছরের পুরনো ব্রিজে অনেকেই ছট পূজোর অনুষ্ঠান করছিলেন। সেতু ভেঙে যাওয়ার পরে মানুষ একে অপরের উপরে পড়ে যায়। ভিডিওতে অনেককে মরিয়া হয়ে সেতুর বেঁচে থাকা অংশ আঁকড়ে থাকতে দেখা গেছে। পাশাপাশি দেখা যায় কিছু মানুষ সাঁতার কেটে পারে ওঠার চেষ্টা করছেন।
গুজরাটের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হর্ষ সাংঘভি সোমবার সকালে বলেছেন যে একটি ফৌজদারি মামলা নথিভুক্ত করা হয়েছে এবং পাঁচ সদস্যের একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিটি ব্রিজটি ভেঙে পরার কারনের তদন্ত করছে। স্থানীয় পৌরসভার প্রধান সন্দীপ সিংহ জালা বলেছেন, শতাব্দী প্রাচীন সেতুটির সংস্কারকারী এটি পুনরায় চালু করার আগে সুরক্ষা শংসাপত্র নেননি।
ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্স বা এনডিআরএফ-এর পাঁচটি দল নিখোঁজদের খুঁজে বের করতে সারারাত কাজ করেছে। সেনাবাহিনী, নৌ ও বিমান বাহিনীও এই অভিযানে যোগ দেয়।
রাজ্য সরকার দুর্ঘটনায় নিহতদের প্রত্যেকের পরিবারের সদস্যদের চার লক্ষ টাকা এবং আহতদের জন্য পঞ্চাশ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছে। এখন গুজরাটে রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনিও নিহতদের পরিবারকে দুই লাখ টাকা আর্থিক সহায়তা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন।
জানা গিয়েছে মেরামতির পর নির্ধারিত সময়ের তিন দিন আগেই মানুষ চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছিল। টানা সাত মাস ধরে সেতুটি মেরামতি হয়েছে। তার পরেও কীভাবে একটি ব্রিজ ভেঙে পড়ল তা বুঝতে পারছে না প্রশাসন। তবে পুজো দেখতে কীভাবে ওই ব্রিজে ৪০০ জন উঠে পড়ল তা নিয়ে পুলিসের দিকে আঙুল তুলছেন রাজ্যের মানুষ। সূত্রের খবর যে সংস্থা ওই ব্রিজ মেরামতির টেন্ডার পেয়েছিল তারা নাকি আগেই জানিয়েছিল ব্রিজটি অন্তত ১৫ বছর মেরামতি করতে হবে না। কিন্তু পাঁচদিনের মাথায় কীভাবে ভেঙে পড়ল তা নিয়েই প্রশ্ন উঠছে।
ব্রিজটি নদীতে ভেঙে পড়ায় বহু মানুষ নিখোঁজ। নদীর যে অংশে ব্রিজটি ভেঙে পড়ছে সেখানে বোট নিয়ে উদ্ধারে নেমেছেন উদ্ধারকারীরা।