জন্মের পর থেকে প্রতিটি মানুষেরই কাশি হয় ৷ আর কাশি উঠলে শরীরের পেট, কোমর, পিঠে অসংখ্য পেশিকে কাজ করতে হয়৷ তাছাড়া কাশি বেশি দিন থাকলে জটিল অবস্থা হতে পারে৷ তবে কাশির ভালো দিকও রয়েছে৷
কাশির কারণ কী?
ঠান্ডা লেগে গলা খুশ খুশ করলে কাশি হয়৷ অথবা গলা দিয়ে কিছু ঢোকালে কাশি হতে পারে৷ এছাড়া নিঃশ্বাসে ধোঁয়া ঢুকে জীবাণু ছাড়ালে বা হঠাৎ করে কিছু গিলে ফেললেও কাশি হতে পারে৷ আসলে নানা কারণে আমরা কাশি৷ গলায় বাতাসের গতি আটকে গিয়ে কাশতে থাকি৷ অবিশ্বাস্য হলেও, কাশির বেগ ঘণ্টায় ১০০০ কিলোমিটারও কিন্তু হতে পারে৷
কাশির ভালো দিক
কাশি শুধু কষ্টই দেয় না, এর কিছু ভালো দিকও রয়েছে৷ যেমন কাশি স্বাসনালী ও ফুসফুসকে পরিষ্কার করে, করে রক্ষা৷ এমনকি কাশি হলে তার জীবাণু শ্বাসনালীতেই থেকে যায়, তাই তা সহজে শরীরের অন্য কোথাও ছড়াতে পারে না৷
কাশি যখন ক্ষতিকর
শুকনো কাশি ভালো নয়, কারণ তা শ্বাসনালী পরিষ্কার করতে পারে না৷ কাশি বেশি শুকনো হলে তা স্বাসনালীর উদ্দীপনার কারণে ক্ষতি করতে পারে৷ তাই বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, বেশি কাশি উঠলে মুখের সামনে হালকা করে হাত বা টিস্যু পেপার ধরে মুখটা খানিকটা ফুলিয়ে একটু সামনের দিক করে বসে কাশলে, কষ্ট কম হবে৷
এর চিকিৎসা কী?
কাশির চিকিৎসা নির্ভর করে কাশির ধরণের ওপর৷ তবে কাশি অল্প হলে কাশির লজেন্স চুষে খেতে পারেন৷ দু’সপ্তাহের পরও যদি কাশি ভালো না হয়, তাহলে কিন্তু ডাক্তারের কাছে যাওয়া আবশ্যক৷
শুষ্ক কাশির ক্ষেত্রে কী করণীয়?
কাশির যদি শুধু সাধারণ ঠান্ডা লাগার সাথে সম্পর্ক হয়, তাহলে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করলেই অনেক সময় তা সেরে যায়৷ ঘরের তাপমাত্রা আদ্র হলেও কাশিতে কিছুটা উপকার হয়৷ লবণ পানির ‘ইনহেলার’-ও কাজে দেয় কাশিতে৷ তাছাড়া কাশির কারণে রাতের ঘুমের সমস্যা হলে সাধারণ কাশির সিরাপই যথেষ্ট৷
যাদের কাশি কমানোর ওষুধ নেওয়া উচিত নয়
দুই বছরের কম বয়সি শিশু কিংবা হবু মায়েদের কাশির ওষুধ না খাওয়াই উচিত৷ আর একান্তই খেতে হলে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত৷
কাশির জীবাণু
ঠান্ডা লাগার সাথে যখন কাশি হয়, তখন কাশতে গিয়ে কাশি গিলে ফেলবেন না৷ বরং যতটা সম্ভব বের করতে হবে৷ কারণ এর মাধ্যমে জীবাণু যেমন বেরিয়ে যাবে, তেমনি তাড়াতাড়ি সুস্থ হওয়া সম্ভাবনাও বাড়বে৷ এই পরামর্শ জার্মান নাক কান গলা বিশেষজ্ঞ ইএনটি স্পেশ্যালিস্ট ডা. ভিচমানের৷
সব কাশি এক নয়
ঘনঘন কাশি অ্যালার্জি বা ঠান্ডা লাগার কারণে হতে পারে না৷ এমনটা তরল কাশি জমে যাওয়ার ফলে হতে পারে৷ মুশকিল হলো, তরল কাশি জমে হৃদযন্ত্রকে আক্রান্ত করতে পারে৷ বিশেষ করে তরল কাশির রং যদি গোলাপি হয়, তাহলে অবশ্যই সতর্ক হওয়া প্রয়োজন৷ প্রয়োজন অবিলম্বে ডাক্তার দেখানো৷
সচেতনতা
যাদের কাশি হয়েছে, তাদের কাছ থেকে খানিকটা দূরে থাকাই ভালো৷ হ্যান্ডশেক, জড়িয়ে ধরা কিংবা তাদের ব্যবহার করা তোয়ালে বা টিস্যুপেপার ব্যবহার না করাই উচিত৷ তাই খুব বেশি কাশি হলে বাসে যাতায়াত বা খুব বেশি লোকজন যেখানে, সেখানে না যাওয়াই শ্রেয়৷