35 C
Bangladesh
Friday, June 2, 2023
Homeজাতীয়দেশ ২০৪১ সাল নাগাদ প্রযুক্তি ভিত্তিক স্মার্ট বাংলাদেশে পরিণত হবে : প্রধানমন্ত্রী

দেশ ২০৪১ সাল নাগাদ প্রযুক্তি ভিত্তিক স্মার্ট বাংলাদেশে পরিণত হবে : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ দৃঢ়ভাবে বলেছেন, ২০৪১ সালের বাংলাদেশ হবে একটি স্মার্ট বাংলাদেশ যেখানে প্রতিটি মানুষের প্রযুক্তিগত জ্ঞান থাকবে এবং দেশ বিশ্ব পরিমন্ডলে পিছিয়ে থাকবে না।
তিনি বলেন, ‘আমাদের শিক্ষা এবং লার্নিং যেমন ই-শিক্ষা, ই-স্বাস্থ্য, ই-ব্যবসা, ই-ইকোনমি, ই-গভর্নেন্স হবে প্রযুক্তিগত জ্ঞান-ভিত্তিক।’
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে (পিএমও) এক অনুষ্ঠানে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের হাতে ২০২৩ শিক্ষাবর্ষের বই তুলে দিয়ে বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। আগামীকাল ১ জানুয়ারি সারাদেশে জাতীয় পাঠ্যপুস্তক উৎসব উদযাপিত হবে।
তিনি বলেন, সমস্ত গ্রামসহ সারাদেশের প্রযুক্তিগত জ্ঞান থাকবে এবং সরকার এ জন্য ব্যবস্থা নিচ্ছে।
শেখ হাসিনা বলেন, ২০৪১ সালের বাংলাদেশ হবে স্মার্ট বাংলাদেশ। মানে প্রতিটি নাগরিক হবে প্রযুক্তি জ্ঞান সম্পন্ন। প্রতিটি ছেলে মেয়ে কম্পিউটার টেকনোলজি এখন থেকে শিখছে এবং আরো এগিয়ে যাবে। আমাদের পুরো জনগোষ্ঠীই হবে প্রযুক্তি জ্ঞানে স্মার্ট। বিশ্ব থেকে কোন কিছুতেই পিছিয়ে থাকবেনা। নিশ্চয়ই আমরা পারবো।
তিনি বলেন, আমাদের লেখাপড়া, শিক্ষা, এ্যাডুকেশন, ই-বিজনেস, ই-ইকোনমি, ই-গভার্নেন্স সবকিছুই প্রযুক্ত জ্ঞান সম্পন্ন হবে। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাই-১ উৎক্ষেপন করা হয়েছে এরপর হবে স্যাটেলাইট-২। সেটাও আমরা করবো। সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে এসব সময় দ্বীপাঞ্চল থেকে শুরু করে সমস্ত জায়গাতেই আমরা ব্রডব্যান্ড অনলাইনে কাজ করার প্রযুক্তি নিয়ে যাব। একবারে গ্রাম পর্যায় পর্যন্ত প্রযুক্তি জ্ঞান সম্পন্ন হবে। সে ব্যবস্থাটাও আমরা করে দিচ্ছি।
তাঁর সরকার ২০২০ সালে জাতির পিতা জন্মশতবার্ষিকী এবং ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপনের সময় উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে কাজেই বাংলাদেশকে এখন আর কেউ অবহেলার চোখে দেখতে পারেনা। বাংলাদেশ বিশে^ তার একটা স্থান করে নিয়েছে। আর ২০৪১ এর বাংলাদেশ হবে উন্নত সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ, যেটা হবে স্মার্ট বাংলাদেশ।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনাভাইরাস এবং ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে সরকার জনগণের অর্থ সাশ্রয়ের জন্য অনেক দিক থেকে কঠোরতা আরোপ করলেও শিশুদের জন্য পাঠ্যপুস্তকের বই ছাপানোর ক্ষেত্রে কোনো আপোস করেনি।
সরকার প্রধান বলেন, এই করোনা, নানা ঝামেলা, ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ- এখন তো সব জিনিসের দাম বেড়ে গেছে। সারা বিশ্বব্যাপী কষ্ট, তার মধ্যেও কিন্তু আমরা শিশুদের কথা ভুলিনি। তাদের বই ছাপানোর খরচাটা- অন্য দিক থেকে আমরা সাশ্রয় করছি, বই ছাপানোর দিকে আমরা বিশেষ দৃষ্টি দিয়েছি। পাশাপাশি কম্পিউটার শিক্ষা অর্থাৎ প্রযুক্তি শিক্ষার প্রতি গুরুত্ব দিচ্ছি। বিশ্ব এগিয়ে যাচ্ছে, আমাদের ছেলে-মেয়েরা কেন পিছিয়ে পড়ে থাকবে।
করোনাকালীন সময়ে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা অব্যহত রাখতে সরকারের নানা উদ্যোগের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, করোনার সময় থেকে এ পর্যন্ত আমার ঘরে আমার স্কুল, অর্থাৎ এখন ডিজিটাল বাংলাদেশ কাজেই ঘরে বসে পড়াশোনা। কেউ যাতে পড়াশোনায় ফাঁকি দিতে না পারে সেই ব্যবস্থাই নেওয়া হয়েছে। সংসদ টিভির মাধ্যমে সারা বাংলাদেশে শিক্ষা কার্যাক্রম চালানো হয়েছে। আবার বিটিভির মাধ্যমেও চালানো হয়েছে। আমি মনে করি, সংসদ টিভি শিক্ষা মন্ত্রণালয় সব সময় ব্যবহার করতে পারে।
শিক্ষার জন্য আলাদা টিভি চ্যানেল চালুর উদ্যোগ নেওয়ার পরিকল্পনার কথা জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি উল্লেখ করেন, দেশের শিশুদের আন্তরিকতার সঙ্গে গড়ে তুলতে পারলে বিশ্বের কোনো শক্তি দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতি ঠেকাতে পারবে না।
আওয়ামী লীগ সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কাজের কথা তুলে ঢালাও সমালোচকদের চোখ থাকতেও দেশের উন্নয়ন তারা দেখতে পান না বলে উল্লেখ করেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘যদিও এত কাজ করার পরেও কিছু লোকের মন ভরে না। তাতেও তারা বলবে আমরা নাকি কিছুই করি নাই। কিছুই করি নাই (যারা বলে) শ্রেনিটা চোখ থাকতেও দেখে না। দৃষ্টি থাকতেও তারা অন্ধ। তারা দেখবেই না।’
তিনি বলেন, তাদের মাথার ভেতরে ‘নাই’ শব্দটা ঢুকে গেছে। আমরা ‘নাই’-তে থাকতে চাই না। আমরা পারি, বাংলাদেশের মানুষ পারে। আমরা সেটাই প্রমাণ করতে চাই। ‘নাই’ ‘নাই’ শুনবো না। আমরা করতে পারবো, এটা করতে হবে।
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী ।
বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন।
বর্তমান সরকার ২০১০ শিক্ষাবর্ষ থেকে বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ শুরু করে এবং এ পর্যন্ত মোট ৪৩৪ কোটি ৪৫ লাখ ৮০ হাজার ২১১টি পাঠ্যপুস্তক বিতরণ করেছে।
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) হিসাব অনুযায়ী সারাদেশে আগামীকাল প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে ৩৩ কোটি ৯১ লাখ ১২ হাজার ৩০০ পাঠ্যপুস্তক বিতরণ করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_imgspot_imgspot_imgspot_img

Most Popular

spot_imgspot_imgspot_imgspot_img