দেশের বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য সরকার এ পর্যন্ত দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে ১৩ হাজার মেট্রিক টন চাল, নগদ সাড়ে ৫ কোটি টাকা ছাড় করেছে।
এছাড়া এর বাইরে ত্রাণ সামগ্রির ৮ হাজার প্যাকেট ও পর্যাপ্ত পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট প্লাবিত জেলা সমূহে পাঠানো হয়েছে।
দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম এমপি আজ শনিবার দূর্যোগ ব্যাবস্থপনা অধিদপ্তরে চলমান বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান।
এসময় দূর্যোগ ব্যবস্থপনা ও ত্রাণ সচিব মোঃ শাহ কামাল, দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক রিয়াজ আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।
মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, “উত্তরাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য ত্রাণের কোন অভাব নেই। প্রত্যেক জেলায় চাহিদার চেয়েও বেশি খাদ্যশস্য, নগদ টাকা ও ত্রাণ সামগ্রি পাঠানো হয়েছে।”
তিনি এ প্রসঙ্গে আরও বলেন, “জেলা পর্যায় থেকে নতুন চাহিদা আসার সাথে সাথেই বরাদ্দ দেয়ার জন্য দূর্যোগ ব্যব¯া’পনা অধিদপ্তকে খাদ্য শস্য ও নগদ অর্থ বরাদ্দ আছে।”
মন্ত্রী বলেন, এ পর্যন্ত প্লাবিত ১৬ জেলার ৫৯ উপজেলার ৩০৯ ইউনিয়নের ৩ লাখ ৯৩ হাজার ৪৯৬টি পরিবারের ১৪ লাখ ৭৫ হাজার ৬১৫ জন মানুষ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এসব মানুষের আশ্রয় দেয়ার জন্য ৬৯টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এখানে ৭ হাজার ৩৭৫ জন মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন।
তিনি বলেন, প্রয়োজনে আরও আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হবে এবং বন্যার পানি নেমে না যাওয়া পর্যন্ত তাদের সেখানে থাকা- খাওয়া ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে। বন্যা প্লাবিত এলাকায় এখন পর্যন্ত ৩৬৪ টি মেডিকেল টিম কাজ করছে বলেও জানান মন্ত্রী।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী মায়া বলেন, এখন পর্যন্ত বন্যায় বিভিন্ন কারণে ১৪ জন লোক মারা গেছেন। এর মধ্যে রংপুরে এক জন, কুঁড়িগ্রামে দুই জন, গাইবান্ধায় চার জন ও জামাল পুরে সাত জন মারা গেছেন।
মায়া চৌধুরী বলেন, মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব বা অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে প্রত্যেক জেলার ত্রাণ তৎপরতা মনিটরিং করার জন্য জেলাভিত্তিক একটি করে মনিটরিং টিম গঠন করা হয়েছে। এঁরা প্রতিদিনের বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ, ত্রাণ তৎপরতায় অংশগ্রহণ এবং প্রতিদিনের প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়কে অবহিত করবেন।
সংবাদ সম্মেলনে এপ্রসঙ্গে মন্ত্রী আরও বলেন, সরকার প্লাবিত এলাকার প্রতিটি অভাবি মানুষকে চাহিদা মতো ত্রাণ সহায়তা, নগদ অর্থ, আশ্রয় ও চিকিৎসা দিতে চায়। এসব কার্যক্রম নিবিড়ভাবে পরিচালনার জন্য সরকার এই মনিটরিং টিম গঠন করেছে।
উত্তারাঞ্চলের পানি দক্ষিণে নেমে আসার সাথে সাথে মানিকগঞ্জ, রাজবাড়ি, মুন্সীগঞ্জ, শরীয়তপুর, মাদারীপুর, চাঁদপুর, লক্ষীপুর ও বরিশালসহ নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হতে পারে বলে আশংকার কথা উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, মন্ত্রণালয় এসব এলাকার বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য আগাম প্রস্তুতি নিয়ে রেেেখছে।
তিনি বলেন, বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে ভয়ের কিছু নেই। ইতিমধ্যে উত্তরাঞ্চলের পানি কমতে শুরু করেছে। পানি কমার সাথে সাথে তাদের ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট মেরামত ও পুর্নবাসনের পদক্ষেপ নেয়া হবে।
মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বন্যা প্লাবিত এলাকার মানুষের দুর্দশা লাঘবে সরকারের পাশাপাশি দলমত নির্বিশেষে সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ও বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।বাসস