সঠিক তদন্ত না হওয়া, মামলার আইনি প্রক্রিয়ায় ভুল থাকা এবং বিলম্বিত বিচারপ্রক্রিয়ার কারণেই জঙ্গি তৎপরতা কমছে না বলে মনে করেন অনেক আইনজীবী। তাঁদের মতে, তদন্তের দুর্বলতা ও মামলার আইনি প্রক্রিয়াগত ত্রুটির সুযোগ নিয়ে জামিনে বেরিয়ে যায় জঙ্গিরা। এতে তাদের মনোবল বেড়ে যায়। এ ছাড়া বিচার ও দণ্ড কার্যকর হওয়ার ক্ষেত্রে দীর্ঘসূত্রতার কারণে কারাগারে থেকেই বাইরের অনুসারীদের নানা নির্দেশনা দিচ্ছেন শীর্ষস্থানীয় জঙ্গি নেতারা। আর একের পর এক হত্যাকাণ্ড ও হামলা চালিয়ে যাচ্ছে তাঁদের অনুসারীরা। জানা গেছে, সম্প্রতি দেশব্যাপী পুলিশের জঙ্গি দমন অভিযানের মধ্যে এবং আগে-পরেও কয়েকজন জঙ্গি জামিন পেয়ে বেরিয়ে গেছে কারাগার থেকে। বিভিন্ন সময়ে জঙ্গিবিরোধী অভিযানে গ্রেপ্তার হওয়া পাঁচ শতাধিক আসামি এ পর্যন্ত জামিন পেয়েছে। এ ছাড়া এ পর্যন্ত ভয়ংকর ২১ জঙ্গিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন দেশের বিভিন্ন আদালত। বছরের পর বছর এদের ডেথ রেফারেন্সের শুনানি হচ্ছে না। ফলে দণ্ড কার্যকরও হচ্ছে না। আবার মুফতি হান্নানের মতো শীর্ষ জঙ্গিদের ডেথ রেফারেন্সে ফাঁসি বহাল থাকলেও সর্বোচ্চ আদালতে আপিল করায় ফাঁসি কার্যকর স্থগিত আছে। অভিযোগ রয়েছে, শীর্ষ জঙ্গি নেতারা কারাগারে থেকেই জঙ্গি তৎপরতা চালাচ্ছেন। আবার জামিনে মুক্ত জঙ্গিরা বা বিভিন্ন মামলায় আসামি হয়ে পলাতক থাকা জঙ্গিরাও জঙ্গি তৎপরতায় জড়িত। দেশের বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা, ব্যাংক লুট, বিভিন্ন ব্যক্তির ওপর হামলা, বিশিষ্ট ব্যক্তির ওপর হুমকি দেওয়ার সঙ্গে পলাতক ও জামিনপ্রাপ্ত জঙ্গিরা জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে। জঙ্গি হামলায় কয়েকটি হত্যাকাণ্ডের পর দেশব্যাপী চলে জঙ্গি অভিযান। কিন্তু এ অভিযানের মধ্যেও জঙ্গিদের জামিন থেমে নেই। চট্টগ্রাম কারাগার সূত্রে জানা গেছে, বিভিন্ন মামলায় আটক ও জামিনে মুক্ত জঙ্গিদের একটি তালিকা তৈরি করা হয়েছে। তাতে ৫৯ জন জঙ্গিকে চিহ্নিত করা হয়েছে, যাদের মধ্যে ১৪ জন জামিনে মুক্তি পেয়েছে। এদের মধ্যে আছে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন হিযবুত তাহ্রীরের আটজন, জামা’আতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) একজন এবং হরকাতুল জিহাদ আল ইসলামী (হুজি) বাংলাদেশের দুজন। এ ছাড়া হামজা ব্রিগেডের তিনজনও জামিন পেয়েছে হাইকোর্টের নির্দেশে। হামজা ব্রিগেডের তিনজন জামিন নিয়ে চট্টগ্রাম কারাগার থেকে ছাড়া পায় গত ৭ মে, ৭ জুন ও ২০ জুন। অথচ দেশে সপ্তাহব্যাপী জঙ্গিবিরোধী সবচেয়ে বড় অভিযানটি পরিচালিত হয়েছে ১০ জুন থেকে। এর আগে ৪ মে জামিন পেয়ে কারাগার থেকে বেরিয়ে যায় জেএমবি সদস্য আবু হাফিজ। হাফিজের বাড়ি নীলফামারী। হিযবুত তাহ্রীরের তিনজন জামিনে ছাড়া পায় গত ২০ এপ্রিল। পাবনার হুজি সদস্য আবদুল্লাহ আল মামুন জামিনে বেরিয়ে যায় গত ১৩ এপ্রিল। একই দলের আরেক সদস্য জামালপুরের মো. আবুল কালাম মুক্তি পায় ২০ এপ্রিল। বিশিষ্ট আইনজীবী ও ক্ষমতাসীন দলের সংসদ সদস্য উম্মে কুলসুম স্মৃতি কালের কণ্ঠকে বলেন, জঙ্গি তৎপরতা যেভাবে বাড়ছে তাতে বিশেষ নজরদারি বাড়ানো জরুরি হয়ে পড়েছে। পৃথক তদন্ত সেল, পৃথক প্রসিকিউশন টিম ও বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে দ্রুত বিচার নিশ্চিত করলেই জঙ্গি তৎপরতা থামবে। বিচার না হওয়ায় কিংবা বিচার ঝুলে থাকায় আর আইনের ফাঁক দিয়ে জামিন পাওয়ায় জঙ্গিরা ভয় পাচ্ছে না। এ কারণে তারা তৎপরতাও থামাচ্ছে না। এটি বন্ধ করতে হলে সরকারকে গুরুত্ব দিতে হবে। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ফারুক আহমেদ বলেন, জঙ্গিদের মামলাগুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নিষ্পত্তি করা এই সরকারের নির্বাচনী ইশতেহারেও ছিল। জঙ্গি নির্মূলের জন্য এটা করা প্রয়োজন। তারা ভয়ংকর অপরাধী। কিছু জঙ্গির ফাঁসি কার্যকর হলে, দ্রুত মামলার বিচার হলে, সহজে জামিন না পেলে নতুন যারা জঙ্গিবাদে ঝুঁকে পড়ছে তারা ভয় পাবে। ঢাকা আইনজীবী সমিতির সভাপতি সাইদুর রহমান মানিক কালের কণ্ঠকে বলেন, দ্রুত বিচারের মাধ্যমে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দ্রুত কার্যকর করা হলে জঙ্গি তৎপরতা দমন হবে। জঙ্গিদের জামিনের বিষয়টি মনিটর করার জন্য পৃথক সেল গঠন করা এবং ওই সব মামলা পরিচালনার জন্য আলাদা প্রসিকিউশন টিম করা উচিত। পাঁচ বছরে পাঁচ শতাধিক জঙ্গির জামিন : নিষিদ্ধ ঘোষিত হুজি, জেএমবি ও হিযবুত তাহ্রীরের সদস্যরা বিভিন্ন সময়ে গ্রেপ্তার হলেও গত পাঁচ বছরে পাঁচ শতাধিক জঙ্গি জামিন পেয়েছে। গুরুতর সব অভিযোগে সন্দেহভাজন জঙ্গি হিসেবে এদের গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। কিন্তু পুলিশি তদন্তে ধীরগতি, যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন না করে ভুলভাবে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা এবং প্রসিকিউশন বা রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের দুর্বল ভূমিকার কারণে ওই জঙ্গিরা বিভিন্ন আদালত থেকে জামিন পেয়েছে বিভিন্ন সময়ে। মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেটের (আইএস) সদস্য ও অর্থ জোগানদাতা সন্দেহে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল কাজী সাইফুদ্দিন ইয়াহিয়াকে। উত্তরা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার এই আসামির বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও গত ১৬ জানুয়ারি ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত তাঁকে জামিন দেন। এরপর জঙ্গিদের জামিনের বিষয়টি আলোচনায় আসে। ঢাকার বিভিন্ন আদালতে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০১৩ সালে ব্লগার আসিফ মহিউদ্দীনকে কুপিয়ে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় সন্দেহভাজন জঙ্গি হিসেবে গ্রেপ্তার করা হয় সাদ আল নাহিন, কামাল হোসেন সরদার, কাওছার হোসেন ও কামাল উদ্দিনকে। এরা হত্যাচেষ্টায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দেয়। কিন্তু তা সত্ত্বেও ঢাকা মহানগর দায়রা জজ ও ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত থেকে এরা জামিন পেয়ে যায়। অবশ্য পূর্ব গোড়ানে ব্লগার নীলাদ্রি চট্টোপাধ্যায় খুন হওয়ার পর নাহিন, কাওছার ও কামাল সরদারকে আবার গ্রেপ্তার করে পুলিশ। কামাল উদ্দিনকে আর গ্রেপ্তার করা যায়নি। পুলিশের প্রতিবেদন মতে, এক মামলা থেকে জামিনে বেরিয়ে এরা আবার আরেকজন ব্লগারকে খুন করে। জানা যায়, ২০১৩ সালের ২১ ডিসেম্বর গোপীবাগে কথিত পীরের বাসায় ঢুকে ছয়জনকে হত্যার মামলায় গ্রেপ্তার জেএমবি সদস্য আজমীর ও গোলাম সারওয়ারও হাইকোর্ট থেকে জামিন পেয়েছেন যথাক্রমে গত বছর ২৬ এপ্রিল ও ১৪ জুন। ২০১৪ সালে আইএস-সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া ব্রিটেনের নাগরিক সামিউন রহমান ইবনে হামদান, আসিফ আদনান ও ফজলে এলাহীও হাইকোর্ট থেকে জামিন পেয়েছেন। ঢাকার বিভিন্ন আদালত সূত্রে জানা গেছে, হিযবুত তাহ্রীরের সদস্যদের বিরুদ্ধে গত পাঁচ বছরে ১৩০টির বেশি মামলা হয়েছে। এদের মধ্যে অধিকাংশ মামলার আসামি জামিন পেয়েছে। ২০০৫ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত জেএমবির সদস্যদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে ৪০টির বেশি। তাদেরও অধিকাংশ আসামির জামিন হয়েছে। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দুর্বল তদন্ত, তদন্তে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ চিহ্নিত না করা, সন্ত্রাসবিরোধী আইনে দায়ের করা মামলায় যথাযথ সরকারি অনুমোদন না নেওয়ায় আসামিরা বিশেষ সুবিধা নিয়ে জামিন পায়। দীর্ঘদিন ধরে তদন্ত চলার কারণেও আসামিরা আদালত থেকে জামিন পেয়ে যায়। আবার যেসব মামলায় অভিযোগপত্র দেওয়া হয় সেসব মামলায় সাক্ষী হাজির করতে না পারায় জামিন পায় আসামিরা। রমনা থানায় হিযবুত তাহ্রীরের নেতা ইমদাদুল হকের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস দমন আইনে দায়ের করা মামলায় ২০০৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। কিন্তু আইন অনুযায়ী অভিযোগপত্র দাখিলের বিষয়ে সরকারি অনুমোদন নেওয়া হয়নি। সে কারণে ওই আসামির জামিন হয়। দণ্ড কার্যকর ঝুলে আছে : সিলেটের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল হুজি নেতা মুফতি আবদুল হান্নানকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন ২০০৮ সালের ২৩ ডিসেম্বর। ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর বোমা হামলায় তিনজন নিহত হওয়ার ঘটনায় দায়ের করা হত্যা মামলায় ওই রায় দেওয়া হয়। একই রায়ে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয় মুফতি হান্নানের দুই সহযোগী শরীফ শাহেদুল বিপুল ও দেলোয়ার হোসেন রিপনকে। মুফতি হান্নান ও বিপুল কারাগারে আছেন। রিপন পলাতক। ওই দুজনের ডেথ রেফারেন্স বা মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিতকরণ অনুমোদনের বিষয়টি সাড়ে পাঁচ বছর ধরে শুনানির অপেক্ষায় ছিল হাইকোর্টে। সম্প্রতি হাইকোর্ট এদের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখলেও আপিল বিভাগে আপিল শুনানির অপেক্ষায় আছে। এদের মতো বিভিন্ন মামলায় আরো ২১ জন ভয়ানক জঙ্গিকে দেশের বিভিন্ন আদালত মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করেন। হাইকোর্টে ডেথ রেফারেন্স মামলাগুলো দীর্ঘদিন ধরে শুনানির অপেক্ষায় আছে। রাষ্ট্রপক্ষ থেকে এসব ডেথ রেফারেন্স শুনানির বিশেষ কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। সরকারের জঙ্গি নির্মূলের ঘোষণা থাকলেও মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত এসব জঙ্গির বিষয়ে সরকারের আগ্রহ দেখা যায় না। অভিযোগ রয়েছে, ফাঁসির দণ্ড মাথায় নিয়ে কারাগারে থাকা এসব জঙ্গি এখনো যোগাযোগ রেখে চলেছে বাইরে থাকা পলাতক জঙ্গিদের সঙ্গে। আর এ কারণে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত দুই জঙ্গি জেএমবির বোমা বিশেষজ্ঞ সালাউদ্দিন ও রাকিব হাসানকে কাশিমপুর কারাগার থেকে একটি মামলায় ময়মনসিংহের আদালতে নেওয়ার সময় ফিল্মি স্টাইলে ছিনিয়ে নেয় সহযোগীরা। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সালাউদ্দিনের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন আদালতে প্রায় ৪০টি এবং রাকিবের বিরুদ্ধে প্রায় ৩০টি মামলা রয়েছে। সালাউদ্দিন তিনটি এবং রাকিব হাসান একটি মামলায় ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত। একটি মামলায় ফাঁসি কার্যকর হলে এদের বিভিন্ন আদালতে হাজির করার প্রয়োজন হতো না। ফলে পালানোরও সুযোগ পেত না তারা। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত যেসব জঙ্গি কারাগারে : মুফতি হান্নান কাশিমপুর ২ নম্বর কারাগারে আছেন। তাঁর বিরুদ্ধে ঢাকা, সিলেট, নোয়াখালী, গোপালগঞ্জ, বাগেরহাট, খুলনা, হবিগঞ্জে মোট ৩৫টি মামলা রয়েছে। এসব মামলায় প্রায়ই তাঁকে কারাগার থেকে দেশের বিভিন্ন আদালতে হাজির করতে নিতে হয়। তিনি ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলারও আসামি। দেশের বিভিন্ন আদালতে তাঁকে নেওয়ার কারণে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ কয়েকবার পিছিয়ে দিতে হয়েছে। রমনা বটমূলে বোমা হামলার সঙ্গে জড়িত হুজি সদস্য আরিফ হাসান সুমনকেও মুফতি হান্নানের সঙ্গে গত বছর মৃত্যুদণ্ড দেন ঢাকার আদালত। সুমন কাশিমপুর কারাগারে আছেন। ওই মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত অন্য আসামিরা এখনো পলাতক। গাজীপুর আদালতে বোমা হামলার দায়ে ২০১৩ সালের ২০ জুন ১০ জঙ্গিকে মৃত্যুদণ্ড দেন ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৪। এদের মধ্যে জেএমবি সদস্য মো. নিজাম উদ্দিন ওরফে রনি ওরফে রেজা, আরিফুর রহমান ওরফে হাসিব ওরফে আকাশ, সাউদুল মুন্সী ওরফে ইমন ওরফে পলাশ, মাসুদ ওরফে আনিসুল ইসলাম ওরফে ভুট্টু, আবদুল্লাহ আল সোয়াইল ওরফে ফারুক ওরফে জাহাঙ্গীর ওরফে আকাশ, এনায়েতুল্লাহ জুয়েল ওরফে ওয়ালিদ, তৈয়বুর রহমান ওরফে হাসান, মামুনুর রশিদ ওরফে জাহিদ, আশ্রাফুল ইসলাম ওরফে আব্বাস খান, আদনান সামী ও শফিউল্লাহ তারেক ওরফে আবুল কালাম কাশিমপুর কারাগারে আছে। ২০০৫ সালের বোমা হামলার ঘটনায় উদ্ভূত একটি হত্যা মামলায় লক্ষ্মীপুরের দায়রা জজ আদালত মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করেন জেএমবির জঙ্গি আমজাদ হোসেন বাবু ও এইচ এম মাসুমুর রহমানকে। ২০০৬ সালের ১৫ আগস্ট রায় দেওয়া হলেও এখনো ডেথ রেফারেন্স শুনানি হয়নি হাইকোর্টে। একই বছরের বোমা হামলার ঘটনায় শরীয়তপুরের বিশেষ ট্রাইব্যুনাল ২০১৩ সালের ২৮ জানুয়ারি ফাঁসির নির্দেশ দেন কামারুজ্জামান ওরফে স্বপন নামের এক জঙ্গিকে। ২০০৬ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি সিলেটের দায়রা জজ ফাঁসির দণ্ড দেন জঙ্গি আক্তারুজ্জামানকে। ২০০৮ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-২ মৃত্যুদণ্ড দেন জঙ্গি আসাদুজ্জামানকে। ২০১০ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর মৃত্যুদণ্ড হয়েছে জঙ্গি আবুল কালাম ওরফে শফিউল্লাহর। এরা সবাই গাজীপুর হাই সিকিউরিটি ও কাশিমপুর কারাগারে আছে। এই আসামিদেরও ডেথ রেফারেন্সের শুনানি হয়নি এখনো। পুলিশের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রত্যেক আসামির বিরুদ্ধে এক থেকে ৪০টি পর্যন্ত মামলা রয়েছে। সম্প্রতি পুলিশের পক্ষ থেকে একটি তালিকা করে এদের ডেথ রেফারেন্স শুনানির ব্যবস্থা করতে সরকারের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়েছে বলে জানা গেছে। (কালেরকণ্ঠ)