যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাঙ্কে রাখা বাংলাদেশ ব্যাঙ্কের ১০ কোটি ডলার চুরি যাওয়ায় আলোচনা-সমালোচনার ঝর উঠে বাংলাদেশে। তীব্র সমালোচনার মধ্যে মি. রহমান মঙ্গলবার গভর্নরের পদ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে দেখা করে তিনি তার কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। বিবিসির এক সাক্ষাৎকারে আতউর রহমান বলেন, প্রাতিষ্ঠানিক দায়িত্ব নিয়ে অত্যন্ত নৈতিক কারণে তিনি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
এই অর্থ লোপাটের ঘটনা সরকারের কাছে লুকিয়ে রাখায় ব্যাপারে জানতে চাইলে মি. রহমান বলেছেন, তারা ঠিক বুঝে উঠতে পারছিলেন না যে তারা কি করবেন। তিনি বলেন, ঘটনাটি জানার পরপরই তারা ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন।
“এটা একটা সাইবার আক্রমণ। অনেকটা সন্ত্রাসী হামলার মতো। কোন দিকে আক্রমণ আসছিলো আমরা বুঝতে পারছিলাম না। ওই একই সময়ে এটিএম বুথগুলোতেও আক্রমণ হয়েছে। ”
তিনি বলেন, “আমরা তখন ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম যে পুরো ব্যাংকিং ব্যবস্থার ওপরেই নাকি আঘাত আনা হয়। এটা ছিলো অনেকটা ভূমিকম্পের মতো। হয়তো কিছুক্ষণ পর আরো একটা আক্রমণ আসতে পারে। ”
মি. রহমান জানান, পরিস্থিতি মোকাবেলায় ঘটনার পরপরই যুক্তরাষ্ট্র থেকে দক্ষ ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ নিয়ে আসা হয়েছে। পুলিশের বিশেষ বাহিনী র্যাবকে ডেকে আনা হয়েছে। আর এসব করতে করতেই তাদের সময় চলে গেছে।
মি. রহমান বলেছেন, “আমরা যদি আগেই এটা প্রকাশ করে দিতাম তাহলে হ্যাকাররা যে টাকাটা নিয়ে পালিয়েছিলো সেটা ধরা পড়তো না।”
তিনি বলেন, অর্থমন্ত্রী ক্ষুব্ধ হয়ে থাকতে পারেন কিন্তু বাংলাদেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার স্বার্থেই তারা এই ঘটনা প্রকাশের ব্যাপারে কিছুটা সময় নিয়েছেন।
পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসার পরেই সরকারকে জানানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন মি. রহমান।
সাত বছর গভর্নরের দায়িত্ব পালনের পর তার এই পদত্যাগকে অত্যন্ত বিরল দৃষ্টান্ত বলে উল্লেখ করে আতিউর রহমান বলেছেন, “সবাই এই সাহস পায় না। আমি এই সাহসী কাজটি করেছি।”
তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গভর্নর হিসেবে তার ভূমিকার প্রশংসা করেছেন।
সূত্র: বিবিসি