সাভার আশুলিয়ায় ব্যাংক ডাকাতি এবং আটজনকে হত্যার ঘটনায় ছয় জঙ্গিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে ঢাকার একটি আদালত। একই সঙ্গে আরো একজনকে যাবজ্জীবন আর দুইজনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেয়া হয়েছে।
দণ্ডপ্রাপ্তরা সবাই নিষিদ্ধ ঘোষিত জামিয়াতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ (জেএমবি) এবং আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সদস্য।
মোট ১১জন আসামীর মধ্যে দুইজনকে খালাস দেয়া দেয়া হয়েছে।
২০১৫ সালের ২১ এপ্রিল আশুলিয়ায় বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের কাঠগড়া শাখায় ওই ডাকাতির সময় জঙ্গিরা গুলি করে ও কুপিয়ে আটজনকে হত্যা করে।
জঙ্গি কর্মকাণ্ডের তহবিল সংগ্রহের উদ্দেশ্যে এই হামলা করা হয় বলে গ্রেপ্তারকৃতরা আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।
রায়ে আদালত বলেন, প্রকাশ্য দিনের আলোয় এই ঘটনা শুধুমাত্র ডাকাতি নয়, বরং ঠাণ্ডা মাথায় বিনা উস্কানিতে, বিনা প্ররোচনায় হত্যাকাণ্ড। আসামীদের সব্বোর্চ্চ শাস্তি দেয়াই সমীচীন, যা উদাহরণ হিসাবে বিবেচিত হবে।
মৃত্যু দণ্ডপ্রাপ্তদের ১০ হাজার, যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত একমাত্র আসামির পাঁচ হাজার এবং বাকি দুজনের তিন হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানা না দিলে কারাদণ্ড হবে।
ডাকাতির ঘটনার পরদিন আশুলিয়া থানায় মামলাটি করা হয়। ২১ জানুয়ারি আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয় ১ ফেব্রুয়ারি থেকে।
আশুলিয়ার কাঠগড়া এলাকায় বেসরকারি ব্যাংক বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের একটি শাখায় ডাকাতরা গ্রেনেড ও ককটেল ব্যবহার করে এবং এলোপাতাড়ি গুলি ছুঁড়ে এক ধরনের তান্ডবের সৃষ্টি করেছিল বলে পুলিশ জানিয়েছে।
ডাকাত দল গ্রাহক সেজে ব্যাংকের ভিতরে প্রবেশের পর কিছু টাকা নিয়ে এক পর্যায়ে যখন গুলি ছোঁড়ে, তখন পাশের মসজিদের মাইকে প্রতিরোধের ঘোষণা দেয়া হয়।
ব্যাংকটির পাশের মার্কেটের ব্যবসায়ী এবং স্থানীয় বাসিন্দারা প্রতিবন্ধকতা তৈরি করলে ডাকাতরা গুলি এবং বোমার ব্যবহার বাড়িয়ে দেয়।
এতে ব্যাংকে ব্যবস্থাপক এবং নিরাপত্তা কর্মীর পাশাপাশি ব্যবসায়ী,পথচারী এবং এলাকাবাসী নিহত হয়।
ব্যবসায়ী এবং স্থানীয় লোকজন তিনজন ডাকাতকেও ধরে ফেলে। এই তিনজনের একজন গণপিটুনিতে নিহত হয়।
ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার হাবিবুর রহমান জানিয়েছেন, ডাকাতরা মাত্র সাত লাখ টাকা নিয়েছিল এবং তার পুরোটাই উদ্ধার হয়েছে।