24 C
Bangladesh
Sunday, March 26, 2023
Homeজাতীয়রিমান্ডে থাকাবস্থায় বন্দুকযুদ্ধে নিহত জঙ্গি ফাহিম

রিমান্ডে থাকাবস্থায় বন্দুকযুদ্ধে নিহত জঙ্গি ফাহিম

1466161652মাদারীপুরে সরকারি নাজিম উদ্দিন কলেজের গণিত বিভাগের প্রভাষক রিপন চক্রবর্তীর ‍উপর হামলাকারী ফাহিম পুলিশের রিমান্ডে থাকাবস্থায় আজ শনিবার ভোররাতে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন।

গত বুধবার প্রভাষক রিপন চক্রবর্তীর উপর আক্রমন চলাকালে ঘটনাস্থলে জনতার হাতে ধরা পরে ফাহিম। পরে তাকে পুলিশ আটক করে।

শনিবার সকালে ফাহিমের লাশ মাদারীপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে আসে পুলিশ। উপস্থিত পুলিশ কর্মকর্তারা সাংবাদিকদের বলেছেন, ভোররাতে সদর উপজেলার বাহাদুরপুর ইউনিয়নের মিয়ারচরে এই ‘বন্দুকযুদ্ধ’ হয়।

নিহত ফাহিমের হাতে হাতকড়া পড়া ছিল।তার বুকের বাম পাশে গুলির দাগের মতো রক্তাক্ত জখম রয়েছে।

নিহত ফাহিম ঢাকার উত্তরার একটি কলেজ থেকে এবার এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন। ১৮ বছর বয়সী এই তরুণ নিষিদ্ধ সংগঠন হিযবুত তাহরীরে যুক্ত ছিলেন বলে পুলিশের দাবি।

ফাহিমের দেওয়া প্রাথমিক তথ্যের ভিত্তিতে ওই হামলার ঘটনায় ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করে পুলিশ। এরপর শুক্রবার তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের হেফাজতে নিয়েছিল পুলিশ।

ফাহিম উত্তরার দক্ষিণ খানে তার পরিবারের সঙ্গে থাকতেন। তারা বাবা একটি তৈরি পোশাক কারখানার কর্মকর্তা, মা গৃহিনী।

ফাহিম গত ১১ জুন সকালের পর থেকে নিখোঁজ বলে দক্ষিণ খান থানায় তার বাবা গোলাম ফারুক একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছিলেন।

ফাহিম তার বাবার মোবাইল ফোনে সর্বশেষ এসএমএসে বলেছিলেন, ‘বিদেশ চলে গেলাম, এছাড়া কোনো উপায় ছিল না। বেঁচে থাকলে আবারও দেখা হবে।’

এরপর বুধবার মাদারীপুরে ধরা পড়ার পর সন্তানের খবর পান ফারুক। তবে ফাহিমের জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে কোনো ধারণা দিতে পারেননি তিনি।

ফাহিম যে কলেজে পড়তেন, সেই উত্তরা হাই স্কুল এন্ড কলেজে তার শ্রেণিশিক্ষক প্রভাষক আফরিন আক্তার বলেছিলেন, ফাহিমেনর আচরণ দেখে তাকে কখনও জঙ্গি বলে তাদের সন্দেহ হয়নি।

“ছেলেটা খুব মেধাবী ছিল। এসএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়েছে। এইচএসসিতেও জিপিএ-৫ পাবে বলে মনে হচ্ছিল। পত্রিকায় ওর ছবি দেখে প্রথমে বিশ্বাসই হয়নি, ফাহিম এত খারাপ কিছু করতে পারে।”

দক্ষিণখানে ফাহিমের প্রতিবেশীরা জানায়, অন্তর্মুখী ফাহিমকে মসজিদে গিয়ে নিয়মিত নামাজ পড়তে দেখতেন তারা। কোনো বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে কখনও দেখেননি।

তবে ফাহিমকে গ্রেপ্তারের পর এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা সাংবাদিকদের বলেন, “কলেজের এক বড় ভাই তাকে এই পথে এনেছে। ঢাকার ওই কলেজের সামনে এক লাইব্রেরিতে প্রায়ই তারা বৈঠক করত।”

গত দেড় বছরজুড়ে লেখক, প্রকাশক, অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট, অধ্যাপক, বিদেশি, হিন্দু পুরোহিত, খ্রিস্টান যাজক, বৌদ্ধ ভিক্ষুর মতো একই কায়দায় ধারাল অস্ত্র নিয়ে হামলা হয়েছিল মাদারীপুরের শিক্ষক রিপনের উপর।

কারও সঙ্গে রিপনের শত্রুতা না থাকা এবং হামলার ধরন দেখে এতে জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার সন্দেহ হয় পুলিশের। এরপর ঢাকায় গিয়ে ফাহিমের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেও কথা বলেন গোয়েন্দা কর্মকর্তারা।

মাদারীপুর সদর মডেল থানার ওসি জিয়াউল মোরশেদ জানান, ফাহিম প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাচেষ্টায় জড়িত আরও পাঁচজনের নাম বলেন।

ফাহিমসহ ওই ছয়জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় আরও কয়েকজনকে আসামি করে শিক্ষকের উপর হামলার ঘটনায় মামলা করে পুলিশ। বাকি পাঁচ আসামি হলেন- সালমান তাসকিন, শাহরিয়ার হাসান, জাহিন, রায়হান ও মেজবাহ।

ওসি বলেন, “দক্ষিণাঞ্চলে জঙ্গি কর্মকাণ্ড বিস্তৃত করার পরিকল্পনা নিয়ে মাদারীপুরে প্রথম হামলা চালায় তারা। ঘটনার দিনই ফাহিম মাদারীপুরে আসে এবং শিক্ষক রিপন চক্রবর্তীকে অনুসরণ শুরু করে।”

‘গভীরভাবে তদন্ত চলছে’ জানিয়ে ‘খুব শিগগিরই ফলাফল’ পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছিলেন মাদারীপুরের গোয়েন্দা পুলিশ পরিদর্শক কামরুল হাসান; তার একদিনের মধ্যে ফাহিম মারা গেলেন কথিত বন্দুকযুদ্ধে। বিডিনিউজ

 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_imgspot_imgspot_imgspot_img

Most Popular

spot_imgspot_imgspot_imgspot_img

Recent Comments