দেশের প্রায় ৩৭টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা কর্মবিরতি পালন করার ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা দেকা দিচ্ছে। এদিকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের আওতাধীন দশটি বিভাগের প্রায় ১৯টি চূড়ান্ত পরীক্ষা ১১ জানুয়ারি থেকে স্থগিত করা হয়েছে।
আন্দোলন আরো কিছুদিন স্থায়ী হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের আরো ৬ টি বিভাগের চূড়ান্ত পরীক্ষা আরম্ভ হওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে। এর ফলে শিক্ষার্থীরা দীর্ঘমেয়াদী সেশনজটের দিকে যাচ্ছে।
শিক্ষকদের আন্দোলনের কারণে স্থগিত করা হয়েছে বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের। এছাড়া সান্ধ্যকালীন কোর্স ইভিনিং এমবিএ এরও সব পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে।
জীববিজ্ঞান অনুষদের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের প্রথম বর্ষের, প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের পিএইচডি ও মাস্টার্সের পরীক্ষা।
গাণিতিক ও পদার্থ বিষয়ক অনুষদের পরিসংখ্যান বিভাগের প্রথম বর্ষেরর আর গণিত বিভাগের চতুর্থ বর্ষের পরীক্ষা বন্ধ আছে।
ইন্সটিটিউট অব ইনফরমেশন টেকনোলজির দ্বিতীয় বর্ষের, ইন্সটিটিউট অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষাও স্থগিত আছে।
সমাজ বিজ্ঞান অনুষদের আওতাধীন নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষ, সরকার ও রাজনীতি বিভাগের প্রথম বর্ষ এবং ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের প্রথম বর্ষের পরীক্ষা।
কলা ও মানবিক অনুষদের আওতাধীন প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের প্রথম বর্ষের, একই বিভাগের এমফিল ও পিএইচডির, বাংলা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ও দ্বিতীয় বর্ষের এবং এমফিল ও পিএইচডির।
জানুয়ারি মাসে আন্দোলন চলতে থাকলে লোক-প্রশাসন বিভাগের প্রথম বর্ষের ও অর্থনীতি বিভাগের প্রথম বর্ষের, ফার্মেসী বিভাগের, ইতিহাস বিভাগের চতুর্থ বর্ষের, নৃবিজ্ঞান বিভাগের এমফিলের এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের প্রথম বর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষা শুরু হওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।
ক্লাস বন্ধ রেখে শিক্ষকদের আন্দোলন নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকেও।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষার্থী শীর্ষ নিউজকে বলেন, শ্রদ্ধেয় স্যাররা আন্দোলন করতে পারেন তবে আমরা ক্ষতিগ্রস্থ হবো কেন? স্যারদের তো আর বেতন-ভাতা বন্ধ নেই।
শিগগিরই একটা সমাধান দরকার জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মোহাম্মদ মাফরুহী সাত্তার বলেন, আমরা বুঝতে পারছি ছাত্রদের অনেক ক্ষতি হচ্ছে, কিন্তু আমাদের আর কিছু করার ছিল না।
গত ১১ জানুয়ারি থেকে পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি পালন শুরু করেন শিক্ষকরা। ওই দিন বিকেলে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এক সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী শিক্ষকদের শ্রেণিকক্ষে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানান। কিন্তু মর্যাদা প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষকরা শ্রেণিকক্ষে ফিরবেন না বলে জানিয়েছেন।
সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অষ্টম পে-স্কেলে শিক্ষকদের অবনমনের প্রতিকার ও মর্যাদা রক্ষার দাবিতে এ কর্মবিরতির পালন করা হচ্ছে।