স্কুল শিক্ষার্থীদের মেধা বিকাশে মাল্টিমিডিয়া ক্লাশরুম তৈরিতে সরকার কাজ করার পাশাপাশি সমাজের বৃত্তবান লোকদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘যারা বিত্তবান বা সমাজে একটু প্রতিষ্ঠিত তারা নিজ নিজ স্কুলে অন্তত, যে স্কুলে আপনারা লেখাপড়া করেছেন সেখানে একটা মল্টিমিডিয়া ক্লাশ রুম বা রুমের সামগ্রী উপহার দেবেন। সমগ্র জাতীয় মাধ্যমে আপমাদের কাছে আমি অনুরোধ জানাচ্ছি… সরকার করবে তবু নিজেরাও চাইলে অবদান রাখতে পারেন।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সকালে তাঁর তেজগাঁওস্থ কার্যালয়ে প্রাথমিক শিক্ষা কন্টেন্ট ইন্টার অ্যাকটিভ মাল্টিমিডিয়া ডিজিটাল ভার্সনে রূপান্তর শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় প্রস্তুতকৃত ডিজিটাল শিক্ষা কন্টেন্ট’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্ত বিভাগ এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে শুভেচ্ছা বক্তৃতা করেন- প্রাথমিক ও গণশিক্ষা বিষয়ক মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক, ব্র্যাকের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারপার্সন স্যার ফজলে হাসান আবেদ, সেভ দ্যা চিলড্রেন’র আঞ্চলিক পরিচালক মাইকেল ম্যাকগ্রা এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব হুমায়ুন খালিদ। স্বাগত বক্তৃতা করেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব শ্যাম সুন্দর শিকদার।
অনুষ্ঠানে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষয়েত্রী ১ম থেকে ৫ম শ্রেণী পর্যন্ত বিভিন্ন ক্লাশের পাঠ্যসূচি হিসেবে শব্দ, ছবি এবং এনিমেশন সমন্বয়ে তৈরি ডিজিটাল কন্টেন্টের সঙ্গে সকলকে পরিচয় করিয়ে দেন। যার মধ্যে রয়েছে- বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় এবং বাংলাভাষা, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের জাতির পিতা, ছড়া, ইংরেজী বিষয়ের ডিজিটাল কন্টেন্ট প্রভৃতি। এছাড়া, ডিজিটাল কন্টেন্ট’র উপর নির্মিত একটি প্রামাণ্য চিত্রও প্রদর্শিত হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ডিজিটাল সিডির মোড়ক উন্মোচন এবং ডিজিটাল কন্টেন্ট সম্বলিত ’ট্যাব’ এ আঙুলের চাপ দিয়ে ডিজিটাল প্রাইমারী শিক্ষার্থীদের জন্য ন্যাশনাল টেক্সট এন্ড কারিকুলাম বোর্ড (এনসিটিবি) সংযোজিত ডিজিটাল কন্টেন্ট শিক্ষা সামগ্রীর উদ্বোধন করেন। প্রধানমন্ত্রী এ সময় সংশ্লিষ্ট ওয়েবসাইটও উদ্বোধন করেন।
প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, সংসদ সদস্যবৃন্দ, মন্ত্রণালয় এবং সরকারের বিভিন্ন দফতরের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা, সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তা, বিদেশী কূটনিতিক এবং উন্নয়ন সহযোগী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকা ও শিক্ষয়েত্রী বৃন্দ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী তাঁর বক্তৃতায় কোমল মতি শিশুদের ভালো ফলাফলের আশায় পড়ার জন্য চাপ না দিয়ে পড়াশোনার প্রতি তাদের আগ্রহী করে তুলতে পরামর্শ দেন।
তিনি বলেন, ‘পড়াশোনার নামে মা-বাবা তথা অভিভাবকদেরর ভালো ফলাফলের জন্য নিজস্ব প্রতিযোগিতা বন্ধ করতে হবে। ভাল ফলের জন্য শিশু বয়সে চাপ দিলে আপাত ভাল হলেও পড়ে ভাল হয় না।’
তিনি ব্যক্তিগত জীবনের অভিজ্ঞতায় বলেন, ‘আমি বা রেহানা কখনও আমাদের বাচ্চাদের পড়ার জন্য চাপ দেইনি। পড়ার জন্য চাপাচাপি করতে হবে কেন, তারা নিজ আগ্রহেই পড়বে।’
আজকের শিশুদের বিশ্বমানের অভিহিত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের শিশুরা অনেক বেশী মেধাবী। তারা প্রযুত্তিনির্ভর আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত । তাদের কাছ থেকে অনেক কিছুই শেখার আছে।..আমার ছেলের কাছ থেকে থেকে এখনও আমি শিখছি,শিক্ষায় কোন লজ্জা নেই।