27 C
Bangladesh
Saturday, April 1, 2023
Homeঅন্যান্যহতাশাকে ঝেড়ে ফেলুন

হতাশাকে ঝেড়ে ফেলুন

আল-আমিন আকন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট. বাংলানিউজ নেটওয়ার্ক.

Forma 31বাস্তবতার জাঁতাকলে মানুষ আজ নির্মমভাবে পিষ্ট। চারদিকে শুধু হতাশা আর দুশ্চিন্তা। বিপদ আপদ এবং দৈনন্দিন বিভিন্ন সমস্যায় নাজেহাল হয়ে পড়ছে মানুষ। কেউ আবার একাকিত্বের ভাবনায় হতাশ। শত কাজের ব্যস্ততায় নিজেকে ভাবছেন একা, জড় পদার্থ। আবার অনেকে অকারণেই নিজেকে ছোট ভেবে কষ্ট পাচ্ছেন। এর কোনোটিই ঠিক নয়। হতাশার পরিণতি সর্বদাই নেতিবাচক। ঝেড়ে ফেলুন সকল হতাশাকে। একটু চিন্তা করলেই বুঝতে পারবেন আপনার চেয়ে আরো অনেক কষ্ট ও অসহায়ভাবে পৃথিবীর অনেকেই দিন যাপন করছে। এই মানুষগুলোর কথা চিন্তা করলেই আপনার কষ্ট অনেক কমবে। জুতার জন্য যে মানুষের মন খারাপ, পা-হীন লোক দেখলে যেমন তার দুঃখ দূর হয়, ঠিক তেমনি পাঁচতলা নিজের বাড়ি করতে না পারার কষ্ট রাস্তায় ঝুপড়ি ঘরের বাসিন্দাদের দেখলে দূর হয়ে যায়। নিজের চেয়ে বড় ও ভালো অবস্থানে যারা আছে, তাদের দেখে কষ্ট পাবেন না, চেষ্টা করুন তাদের মতো হওয়ার। আপনার সততা আর পরিশ্রম আপনাকে এনে দেবে সাফল্য। অল্পে তুষ্ট থাকতে চেষ্টা করুন। জীবনের দুঃখের স্মৃতিগুলো বাদ দিয়ে প্রিয় স্মৃতিগুলো স্মরণ করুন। তৈরি করুন ভালো বন্ধু, তার সঙ্গে ভাগ করুন সব মনোভাব, কষ্ট ভাগ করে নিলে নিজেকে অনেক হালকা মনে হবে। সুখের সঙ্গে দুঃখও অনিবার্য এই চরম সত্যটা মেনে নিয়েই আপনাকে পথ চলতে হবে।
মনে রাখবেন, যে ব্যক্তি যত বেশি হতাশ হবে, সে জীবন থেকে তত বেশি পিছিয়ে যাবে। হতাশা শুধু কষ্টই ডেকে আনে, কোনো সাফল্য নয়। মানুষের মস্তিষ্ক তার চিন্তা-চেতনা আর আবেগের স্থান। মস্তিষ্কই নিয়ন্ত্রণ করে যাবতীয় মানসিক বিষয়। মস্তিষ্কে রয়েছে অসংখ্য শিরা-উপশিরা আর স্নায়ু। মন খারাপ বা অতিরিক্ত দুশ্চিন্তায় স্নায়ুগুলো দুর্বল হয়ে পড়ে। একটি স্নায়ু অপর স্নায়ুকেও প্রভাবিত করে। ফলে অপর স্নায়ুগুলো দুর্বল হয়ে যায়। এর ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে অন্য অঙ্গগুলোর ওপর। ফলে দেহ তার স্বাভাবিক কাজকর্মের গতি হারিয়ে ফেলে। আর এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে ত্বক ও চুলের ওপর। অতিরিক্ত দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হলে ত্বক অকালেই বৃদ্ধ মানুষের মতো দেখায়। দেহের অভ্যন্তরীণ অঙ্গগুলো দুর্বল হওয়ার জন্য চুলও ঝরতে শুরু করে। হারিয়ে যায় চুলের ঔজ্জ্বল্য। ত্বকে সৃষ্টি হয় অজস্র ভাঁজ এবং বলিরেখা। সুতরাং মস্তিষ্ককে বিশ্রাম দিন। মাঝে মাঝে নীরব শান্ত কোনো পরিবেশে গভীরভাবে আত্মসমালোচনা করুন। কিছু সময় চোখ বন্ধ রেখে জোরে শ্বাস-প্রশ্বাস নিন। ভাবতে থাকুন আপনি ভীষণ সুখী মানুষ। আপনার কোনো সমস্যা নেই, জীবনযুদ্ধে আপনি সফল হয়েছেন এবং হবেন। এ ধরনের ইতিবাচক চিন্তা করুন এবং জোরে শ্বাস নিন। মনে করুন জীবনের কষ্টগুলো দুঃস্বপ্নের মতো। সামনে আপনার সাফল্যের দিন।
বর্তমান নিয়ে ভাবুন, ভবিষ্যতের জন্য কোনো কিছু অবহেলা করবেন না। ভবিষ্যতে কোনো কাজ ফলপ্রসূ হবে না ভেবে কাজ ছেড়ে বসে থাকবেন না। সর্বদা সত্য ও সুন্দরের পক্ষে থাকুন, বিবেক সবচেয়ে বড় আদালত। আপনার বিবেক, বুদ্ধি, মেধা, যোগ্যতা মহান আল্লাহর অপার দান। তা দিয়ে প্রত্যেকটি বিষয়কে মূল্যায়ন করুন, সত্য ও সুন্দরের পক্ষে থাকুন প্রশান্তি পাবেন। প্রত্যেক বিষয়কে সহজভাবে চিন্তা করুন। সময় ও বিশ্বাসের সাথে সাথে নিজেকে পরিবর্তনশীল করে গড়ে তুলুন। সর্বশেষ বিষয়টি হলো আপনার চিন্তাশক্তিকে ভালো কাজে লাগান, কুচিন্তা, কু-অভ্যাস, কু-সঙ্গ পরিহার করুন। সেই সাথে স্বপ্ন দেখুন, আশাবাদী হোন, এবং মহান আল্লাহর উপর ভরসা করে পথ চলা শুরু করুন, দেখবেন আপনার সকল হতাশা কেটে গেছে। আল্লাহ আমাদের সকলকে হতাশামুক্ত কর্মমুখর আশাবাদী জীবন দান করুন। আমীন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_imgspot_imgspot_imgspot_img

Most Popular

spot_imgspot_imgspot_imgspot_img

Recent Comments