31 C
Bangladesh
Tuesday, March 28, 2023
Homeজাতীয়হামলাকারী সন্ত্রাসীদের কোন ধর্ম নেই,সন্ত্রাসই এদের ধর্ম : প্রধানমন্ত্রী

হামলাকারী সন্ত্রাসীদের কোন ধর্ম নেই,সন্ত্রাসই এদের ধর্ম : প্রধানমন্ত্রী

pm2প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গুলশান-২’এ হলি অর্টিজন হোটেলে নিরাপত্তাবাহিনীর সফল অভিযান পরিচালনাকারী সংশ্লিস্টদের অভিনন্দন জানিয়ে হামলাকারীদের ব্যাপারে বলেছেন,এই হামলাকারীরা কোন ধর্মই বিশ্বাস করে না। এদের কোন ধর্ম নেই,সন্ত্রাসই এদের ধর্ম।
তিনি গুলশাল ২ এর হলি অর্টিজন হোটেলে জিম্মী সমস্যা সমাধানে সফল হবার জন্য বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রথম প্যারা কমান্ডো ব্যাটালিয়ন সহ সেনা সদস্যদের,পুলিশ,র‌্যাব,বিজিবি, নেভী এবং বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের অভিনন্দন জানান।
সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা ফলেই মাত্র ১০ ঘন্টারও কম সময়ে প্রায় সকল সন্ত্রাসীদের খতম করে প্রায় ১৩ জন নাগরিককে জিবিত উদ্ধার করা হয়েছে বলেও প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন।
এ সময় তিনি মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের দরবারে শোকরিয়াও জ্ঞাপন করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সকাল সাড়ে ১১ টায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে চারলেনে উন্নীত ঢাকা-চট্টগ্রাম জাতীয় মহাসড়ক এবং জয়দেবপুর-ময়মনসিংহ জাতীয় মহাসড়ক নির্মাণ উদ্বোধন উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অথিথির ভাষণে গতরাতে দেশে প্রথম বারের মত সংঘটিত রুদ্ধশ্বাস জিম্মী পরিস্থিতির বর্ণনা করতে গিয়ে সংশ্লিষ্ট সকলকে অভিনন্দন জনিয়ে এ সব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন,‘একটা সফল অপারেশন করার জন্য আমি আমাদের প্রথম প্যারা কমান্ডো ব্যাটালিয়নকে অভিনন্দন জানাই। সেই সাথে অভিনন্দন জানাই আমাদের সেনাবাহিনী,নেভি,পুলিশ,র‌্যাব,বিজিবি আমাদের বিমানবাহিনী সকলকেই, কারণ সকলে একত্রিত হয়ে সারারাত কষ্ট করে এই অপারেশনটা সফল করেছে। সকলে মিলে অপারেশন চালানোর ফলেই আমরা এই স্বল্প সময়ের মধ্যে সন্ত্রাসীদের খতম করতে সমর্থ হয়েছি।’
অনুষ্ঠানে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং সেনাবাহিনীপ্রধান আবু বেলাল মোহাম্মদ শফিউল হক উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী গুলশান-২’এ হলি অর্টিজান রেষ্টুরেন্টে গতরাতের রুদ্ধশ্বাস জিম্মী পরিস্থিতি সম্পর্কে বলেন-আমাদের দুর্ভাগ্য হল দেশ যখন এগিয়ে যায় মানুষ যখন খুব আনন্দে উচ্ছসিত হয় ঠিক সেই সময় জানিরা কেন যেন আমাদের ওপর এক একটা আঘাত চলে আসে।
তিনি বলেন, আমি জানি আপনারা খুব উদ্বেগের সঙ্গে রয়েছেন। গত রাতে এশার নামাজের পর পর কিছু সন্ত্রাসী তারা গুলশানের হলি আর্টিজান রেষ্টুরেন্টে ঢুকে সেখানে যারা ছিল তাদেরকে জিম্মী করে ফেলে। আমাদের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা অতন্ত তৎপর ছিল। যে মুহুর্তেই ঘটনাটি ঘটেছে টহল পুলিশ তৎক্ষণাৎ সেখানে চলে যায় এবং আমাদের থানা পুলিশও চলে আসে এবং তারা যথনই অ্যাকশন নিতে চায় তখনই সন্ত্রাসীদের বোমা হামলায় দু’জন পুলিশ অফিসার মারা যায় এবং প্রায় ৩০ জনের মত আহত হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন,যা হোক আমরা সেখানেই থেমে থাকিনি..তাদের উপস্থিতির জন্যই সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়নি। তারা সেখানেই আটকা থাকে। এর মাঝেই আমরা সেনাবাহিনীকে ডাকি এবং সেনাবাহিনীর যে প্রথম প্যারা কমান্ডো ব্যাটালিয়ান, সিলেট থেকে সে ব্যাটালিয়ান আনা হয়। সাভার থেকে কমান্ডো,ক্যান্টনমেন্ট থেকে কমান্ডো নিয়ে আসা হয়। সেবাহিনীর সঙ্গে সঙ্গে আমাদের পুলিশ, র‌্যাব,বিজিবি-তারাও সেখানে প্রস্তÍুত থাকে এবং এই সন্ত্রাসীদের দমন করার, এদের হাত থেকে মানুষদের বাঁচানোর পরিকল্পনা আমরা নেই। এগুলো করতে করতে রাত যখন ৪টা তখন সকলে মিলে, আমাদের সেনা প্রধানও এখানে আছেন (অনুষ্ঠানে উপস্থিত)।
শেখ হাসিনা বলেন,‘ .. সমগ্র পরিকল্পনা গণভবনে বসেই নেই কিভাবে অপারেশনটা চালানো হবে। ..এই অপারেশনের মাধ্যমে এটাই সুখের কথা ১০ ঘন্টার বেশি সময় লাগেনি তার আগেই আমরা জিম্মী করে রাখা সন্ত্রাসীদের ওপর আক্রমণ চালাতে সক্ষম হই এবং যারা জিম্মী ছিল আমরা ১৩ জনকে বাঁচোতে পেরেছি। বাকী কয়েকজনকে হয়তো বাঁচাতে পারিনি। কয়েকজন আহতাবস্থায় সিএএইচএ চিকিৎসাধীন আছে। যারা সন্ত্রাসী তাদের ৬ জনই ঘটনাস্থলে মৃত্যুবরণ করে,তাদের হত্যা করা হয় একজন ধরা পড়েছে। যারা ঐখানে ছিল,সন্ত্রাসী প্রায় সবগুলোয় সেখানে নিহত হয়। একটা সফল অপারেশন করার জন্য আমি আমাদের প্রথম প্যারা কমান্ডো ব্যাটালিয়নকে অভিনন্দন জানাই। সেই সাথে অভিনন্দন জানাই আমাদের সেনাবাহিনী,নেভি,পুলিশ,র‌্যাব,বিজিবি আমাদের বিমানবাহিনী সকলকেই, কারণ সকলে একত্রিত হয়ে সারারাত কষ্ট করে এই অপারেশনটা সফল করেছে। সকলে মিলে অপারেশন চালানোর ফলেই আমরা এই স্বল্প সময়ের মধ্যে সন্ত্রাসীদের খতম করতে সমর্থ হয়েছি।
আমাদের বাংলাদেশের সবসময় একটা সিদ্ধান্ত রয়েছে যে আমরা বাংলাদেশে এই সন্ত্রাসবাদ-জঙ্গিবাদ চাই না। এই ধরনের ঘটনা এই প্রথম। এরআগে তারা টুকটাক করে একটা-দুটো ঘটনা,মানুষ হত্যা করে যাচ্ছিল কিন্তুু হঠাৎ এই ধরনের ঘটনা তাঁরা ঘটিয়েছে। এটা অত্যন্ত ঘৃণিত কাজ করেছে। যারা এইভাবে জঙ্গি হয়ে ঢুকল,সন্ত্রাসী হয়ে ঢুকল এবং মানুষতে হত্যা করল আর তারা নিজেরাও বাঁচতে পারল না ।
তিনি বলেন, আমি জানি না রমজান মাসে একজন মুসলমান যখন নামাজ পড়বে। এশার আজান হয়েছে অথচ আজান উপেক্ষা করে এরা গেল মানুষ খুন করতে-তাহলে মেন মুসলমান তারা। এটা হল বড় প্রশ্ন তারা কেমন মুসলমান ? কেমন ধর্ম তারা রক্ষা করল ? ..তারা নামাজ রেখে মানুষ খুন করতে চলে গেল! আর সেখানে নিজেরাও বাঁচতে পারল না, তাদেরকেও মরতে হল। তাদের পরিবার-তারাই বা কি পেল!
প্রধানমন্ত্রী এ সময় আক্ষেপ করে বলেন, কেন যে এ ধরনের সন্ত্রাসের পথে মানুষ যায় সেঠা আমার বোধগম্য নয় এবং যেভাবে তারা হত্যাগুলি করেছে, হামলাকারীরা একটা জিঘাংসা-প্রতিহিংসা চরিতার্থ করেছে। একটা মানুষ অপর একটা মানুষের ওপরে কি করে এভাবে আক্রমন করে? আর তাও এই পবিত্র রমজান মাসে। আল্লাহর রহমতে আমরা এদেরকে দমন করতে পেরেছি, খতম করতে পেরেছি এজন্য আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে শোকর করি আর যারা এই অপারেশনের সঙ্গে সম্পৃক্ত সকলকে আমি ধন্যবাদ জানাই। সেই সাথে সাথে যারা আমাদের সাথে সহযোগিতা করেছেন তাদেরকেও ধন্যবাদ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_imgspot_imgspot_imgspot_img

Most Popular

spot_imgspot_imgspot_imgspot_img

Recent Comments