মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদ নিয়ে কোনো ধরনের বির্তকের কোনো অবকাশ নেই বলে পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
নেত্রকোনার রাজাকার কমান্ডার মো. ওবায়দুল হক তাহের ও আতাউর রহমান ননীর বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলার রায়ে এ পর্যবেক্ষণ দেয়া হয়। আনীত অভিযোগ প্রমানিত হওয়ায় তাহের ও আতাউর রহমান ননীকে মৃত্যুদন্ড কার্যকর করার রায় দিয়েছে আজ ট্রাইব্যুনাল।
রায় ঘোষণার পর এক প্রতিক্রিয়ায় ট্রাইব্যুনালের অন্যতম প্রসিকিউটর জেয়াদ আল মালুম সাংবাদিকদের বলেন,
ইতোমধ্যে ৩০ লাখ শহীদের বিষয়ে যে বির্তকের সৃষ্টি করা হয়েছে এ রায় প্রদান করার মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল সে বিষয়ে আজ যুক্তিখন্ডন করেছে। ৩০ লাখ শহীদ নিয়ে কোনো ধরনের বির্তকের কোনো অবকাশ নেই বলে ট্রাইব্যুনাল রায়ের পর্যবেক্ষনে উল্লেখ করেছে। ৩০ লাখ মানুষের আত্মদানের মধ্য দিয়ে যে স্বাধীন বাংলাদেশ তা আবারও প্রমাণিত হয়েছে এ রায়ের মধ্যে দিয়ে। শহীদ পরিবার এবং ভিকটিম পরিবার, তাদের যে সন্তুষ্টির এবং আকুতির বিষয় ট্রাইব্যুনালের রায় প্রদানের মধ্য দিয়ে তা প্রতিফলিত হয়েছে।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এর চেয়ারম্যান বিচারপতি আনোয়ারুল হকের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল জনাকীর্ন ট্রাইব্যুনালে আজ এ রায় ঘোষণা করে। মামলায় ২৬৮ পৃষ্ঠার রায়ের সংক্ষিপ্তসার উপস্থাপন করে ট্রাইব্যুনাল। প্যানেলের অন্য সদস্যরা হলেন বিচারপতি শাহিনুর ইসলাম ও বিচারপতি মো. সোহরাওয়ার্দী।
প্রসিকিউটর মোখলেছুর রহমান বাদল সাংবাদিকদের বলেন, আসামি তাহের ও ননীর বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের সময় হত্যা, গণহত্যা, অপহরণ, দেশান্তরিতকরণ, বাড়িঘরে আগুন ও লুটপাটের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় সর্বোচ্চ এ সাজা দেয়া হয়েছে।
মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িতদের বিচারে গঠিত পৃথক দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এ পর্যন্ত ২১ মামলায় ২৪ আসামির বিরুদ্ধে রায় হয়েছে। নেত্রকোনার ওবায়দুল হক তাহের ও আতাউর রহমান ননীর বিরুদ্ধে মামলায় রায় হলো ট্রাইব্যুনালের ২২ তম রায়। একটি ট্রাইব্যুনাল হওয়ার পর এটি প্রথম রায়। এ পর্যন্ত রায় আসা ২২টি মামলার ২৬ আসামির মধ্যে তাহের ও ননীকে নিয়ে মোট ১৮ যুদ্ধাপরাধীর সর্বোচ্চ সাজার আদেশ হল।