আমেরিকায় একটা বাচ্চা সপ্তায় গড়ে ৭০ ঘণ্টা টিভির সামনে কাটায়। অন্যদিকে বাবা-মার সাথে সত্যিকার অর্থে কথা বলে মাত্র আধা ঘণ্টার কিছু ওপরে। বাচ্চারা স্মার্টফোনে বসে কতো দূর-দূরান্তের মানুষের সাথে কথা বলে, অথচ পাশের ঘরে বাবা-মায়ের সাথে কথা বলার ফুরসত পায় না। ওদের এই মোহের দেওয়াল ভাঙতে হবে আপনাকে। নিজ থেকে ওদের সাথে কথা বলতে হবে প্রতিদিন। এতে শুধু বাচ্চাদের আত্মমর্যাদাই বাড়বে না, পাওয়া যাবে আরও অনেক উপকার।
বাচ্চার সাথে নিয়মিত প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে কথা না বললে আপনাদের সম্পর্ক মজবুত হবে না। আপনার কথায় তখন আর কোনো কাজ হবে না। বাচ্চা যতো বড় হবে, বাইরের পৃথিবী সম্বন্ধে জানবে, আপনার প্রভাব ততো কমবে। কিন্তু ছোটবেলা থেকেই যদি ওর সাথে নিয়মিত কথাবার্তা বলেন, বাচ্চা তাহলে যেকোনো প্রশ্ন জিজ্ঞেস করবে আপনার কাছে। যেকোনো সন্দেহ নিয়ে গুগলে সময় নষ্ট না করে আপনার সাথে আলাপ করবে। এজন্য সন্তানের সাথে আপনার কথা বলার দুয়ার খোলা রাখতে হবে সবসময়। আপনিও এভাবে নানান কথায় ইসলামের আদর্শগুলো, মূল্যবোধগুলো সহজে ওদের মাঝে সঞ্চার করতে পারবেন। আলাদা করে লেকচার দিতে হবে না তাহলে।
কচুমু কথাবার্তায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো শোনা! বাচ্চাকে একনাগাড়ে আগে কথাগুলো বলতে দেন। ওর কথার মাঝে বাধা দেবেন না। নিজের মতটা ওকে জানাতে দেন। ও আগে কথা বলা শেষ করুক। মন দিয়ে শুনুন। তারপর নিজের মত, নিজের পরামর্শ দেন। ও বাচ্চা বলে ওর আবেগ-অনুভূতির প্রকাশকে হালকাভাবে নেবেন না। ওদের কাজেকর্মে গুরুত্ব দেখাবেন। ওরা কী করছে সে-সম্বন্ধে আগ্রহভরে খোঁজখবর নেবেন। নীতিকথা লেকচারের মতো করে ওদের বলার প্রয়োজন নেই। ওদের সঙ্গে কথা বলতে বলতে উপযুক্ত প্রসঙ্গে ইসলামের কথাগুলো বলে দেন। নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বাচ্চাদের কখনও লেকচার দিতেন না ইসলামের বিষয়গুলো নিয়ে। বাচ্চাদের কোনো সমস্যা ঠিক করতে এগুলো নিয়ে ওদের দোষারোপ করবেন না। ওর সুভাবচরিত্র নিয়ে বাজে মন্তব্য করবেন না। সুন্দরভাবে সমাধানটা বুঝিয়ে দেবেন।