লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে উপকূলীয় মেঘনার চরাঞ্চলের ৪টি ইউপিসহ শহর এবং ১০টি ইউপির বিভিন্ন এলাকা থেকে বন্যার পানি নেমে গেছে প্রায় এক সাপ্তাহ আগে। পানি কমার পর পরই বেরিয়ে আসছে বন্যার ক্ষতবিক্ষত চিহ্ন।
সঙ্গে দেখা দিচ্ছে নানা রোগব্যাধি-ডায়রিয়া, জ্বর, সর্দি-কাশি, শ্বাসকষ্ট ও চর্মরোগে ব্যাপক আক্রান্ত হচ্ছেন বন্যাদুর্গত এলাকার মানুষ। এছাড়াও প্রায় ২০ দিন ধরে বন্যা ও টানা ভারি বর্ষণে রায়পুরে বয়স্ক ও শিশুরা জ্বর, সর্দি-কাশি ও ডায়রিয়ায়সহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হচ্ছে হাসপতালে।
জানা যায়, রায়পুর উপজেলায় প্রায় ৫ লাখ মানুষের বসবাস। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটির কার্যক্রমে ডাক্তারদের ৩১টি পদের মধ্যে আছেন ১৭ জন। এর মধ্যে চারজন ছুটিতে আছেন। বাকি সাতজন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও ছয় চিকিৎসক আছেন উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে। দুই চিকিৎসক ছুটি না নিয়েই ১২ বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন। এই সংকটের মধ্যেও পাঁচজন চিকিৎসককে সাবেক এমপি নয়ন ও সিভিল সার্জন আহাম্মদ হোসেনের সুপারিশে সদর হাসপাতালে ডেপুটেশনে রাখা হয়েছে। কিন্তু তারা বেতন তুলছেন রায়পুর থেকে। এতে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক-নার্সের সংকটে চিকিৎসা সেবাবঞ্চিত হচ্ছেন প্রতিদিন ৫০০ থেকে ৬০০ রোগী। ফলে চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হচ্ছে।
রায়পুর চরবংশী ইউপির চরআবাবিল এলাকার আমেনা বেগম (৪২) বলেন, গ্রামের অনেক বসতভিটা পানিবন্দি ছিল। পানির ভেতরে আমাদের চলাচল করতে হয়েছিল। এতে আমার হাতে-পায়ে চর্মরোগ দেখা দেয়। গ্রামের সব পরিবারেই কোনো না কোনো রোগ দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসেও সঠিক চিকিৎসা পাচ্ছি না। ডাক্তার নেই, আছে ওষুধ সংকটও।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ বাহারুল আলম বলেন, রায়পুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ছাড়াও ১০টি ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ভবন আছে। বরাদ্দও ঠিক আছে। চিকিৎসক সংকটে অনেক সময় সরঞ্জাম থাকলেও চিকিৎসা রোগীদের চাহিদা মত দেওয়া সম্ভব হয় না। বন্যার কারণে রোগী বেড়ে যাওয়া ও পর্যাপ্ত চিকিৎসক না থাকায় কিছু হিমশিম খেতে হচ্ছে।