রাজধানীসহ সারা দেশে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে বিশেষ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা দিয়েছে সরকার। সেনাবাহিনীর কমিশনপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের এ ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে এ সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। প্রজ্ঞাপন জারির তারিখ অর্থাৎ মঙ্গলবার থেকে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়েছে। আগামী দুই মাস (৬০ দিন) এই সিদ্ধান্ত বলবৎ থাকবে।
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে ঢাকাসহ সারা দেশে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়লে গত ১৯ জুলাই দিবাগত রাতে সারা দেশে সেনাবাহিনী মোতায়েন ও কারফিউ জারি করে সরকার। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। এরপর ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। দেশের বিদ্যমান পরিস্থিতিতে এখনো সারা দেশে সেনাবাহিনী মোতায়েন আছে। বর্তমানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে নানা আলোচনার মধ্যেই সেনাবাহিনীকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা দিল সরকার।
ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতায় সেনাবাহিনী যা যা করতে পারবে
ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেয়ার কারণে এখন থেকে সেনাসদস্যরা তল্লাসি চালানো, জব্দ করা, গ্রেফতার করার মতো সিদ্ধান্ত বা আদেশ দিতে পারবে। আগে এ ধরনের ব্যবস্থা নিতে বেসরকারি প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের অনুমোদন দরকার হতো। কিন্তু এখন কমিশন্ড সেনা অফিসাররা নিজেরাই সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন বা আদেশ দিতে পারবেন।
বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক নুরুল হুদা বলেন, এ ধরনের নজীর অতীতেও রয়েছে। এটি আনইউজুয়াল কোন ঘটনা নয়। এর ফলে, সেনাবাহিনীর কমিশন্ড অফিসাররা বেআইনি জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে হলে যে সমস্ত ক্ষমতা সিআরপিসিতে দেয়া আছে সে সমস্ত তারা ব্যবহার করতে পারবে বলে জানান পুলিশের এই সাবেক মহাপরিদর্শক।
প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা ধারাগুলোর কথা জানালে নুরুল হুদা বলেন, ‘ওই ধারা মোতাবেকই দেয়া যায় তাদেরকে। কমিশন্ড অফিসাররা যখন চার্জ (ক্ষমতা গ্রহণ করা) নেবে তখন তারা ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার এক্সেস (নির্বাহী ক্ষমতা প্রয়োগ) করতে পারে। জনস্বার্থে প্রয়োজনীয় মনে করছে বলেই সরকার করছে। এর নজীর আছে।’
তিনি বলেন, ‘সার্চ, সিজার (জব্দ করা) এসব ক্ষমতা। কিছু কিছু অপরাধ-সংক্রান্ত যাদেরকে সার্চ করা লাগে, এরেস্ট করা লাগে সেই ক্ষমতাগুলো দেয়া হচ্ছে।’