ঢাকা | |

চেয়ারম্যান যখন আত্মসাৎকারী

লোভ মানুষকে নীতিহীন, নির্দয় করে তোলে। এই লোভী মানুষের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। অতিদরিদ্র মানুষদের জন্য বরাদ্দ সরকারি
  • আপলোড সময় : ১৫ জুন ২০২৩, দুপুর ১১:৬ সময়
  • আপডেট সময় : ১৫ জুন ২০২৩, দুপুর ১১:৬ সময়
চেয়ারম্যান যখন আত্মসাৎকারী ছবি : সংগৃহীত

লোভ মানুষকে নীতিহীন, নির্দয় করে তোলে। এই লোভী মানুষের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। অতিদরিদ্র মানুষদের জন্য বরাদ্দ সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করতে কোনো ধরনের দ্বিধাবোধ করেন না। একজন ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অতিদরিদ্রের শ্রমের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ঘটেছে মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর উপজেলার ধল্লা ইউনিয়নে। কর্মসৃজন কর্মসূচির আওতায় শ্রমিকের সঞ্চয়ের বিশাল অঙ্কের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে ওই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে।

২০২০-২১ অর্থবছরে ধল্লা ইউনিয়নে অতিদরিদ্র ব্যক্তিদের কর্মসৃজন কর্মসূচির আওতায় প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ে ১০টি প্রকল্প বাস্তবায়নের কার্যক্রম চলমান। প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ের প্রকল্পের মেয়াদ ছিল ৮০ দিনের। প্রকল্পের নিয়ম অনুযায়ী, দৈনিক মজুরির ২০০ থেকে ৫০ টাকা সঞ্চয়ের জন্য শ্রমিকের ব্যাংক হিসাবে জমা করে বাকি টাকা মজুরি হিসাবে দেওয়া হয়। প্রত্যেক শ্রমিকের দুই পর্যায়ে ৪ হাজার টাকা করে হলে ২২৯ জন শ্রমিকের প্রায় ৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা সঞ্চয় তাঁদের নিজ নিজ ব্যাংক হিসাবে জমা হয়। শ্রমিকদের সঞ্চয়ের ওই টাকা অর্থবছর শেষে প্রকল্পের সভাপতির মাধ্যমে শ্রমিকদের ফিরিয়ে  দেওয়ার কথা। কিন্তু অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান কোনো নিয়মের তোয়াক্কা না করে ব্যাংক কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় সঞ্চয়ের ওই টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেছেন। ইউনিয়ন পরিষদের সাত সদস্য ও প্রকল্প সভাপতি জেলা প্রশাসক বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

শুধু কি শ্রমিকের টাকা আত্মসাৎ করা হয়? সরকার দারিদ্র্য নিরসনে এবং বিশেষ পেশা বা সম্প্রদায়ের জনগোষ্ঠীকে সহায়তা করার জন্য বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ করেছে। এসব প্রকল্পে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া যায়। বিধবা না হয়ে ভাতা উত্তোলন, ধনী হয়ে ভূমিহীনের জমি পাওয়া এবং প্রকৃত গৃহহীন মানুষ আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর না পাওয়াসহ নানা অভিযোগের খবর প্রতিনিয়ত পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হয়। আর অধিকাংশ ক্ষেত্রে এসব অভিযোগের তির থাকে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের দিকে।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জনসাধারণের ভোটে নির্বাচিত হন। তাঁদের জবাবদিহি থাকার কথা এলাকার জনসাধারণের কাছে। কিন্তু আমাদের দেশে জবাবদিহির বিষয়টি দিন দিনই দুর্বল হয়ে পড়ছে। ভোটের জন্য মানুষের দুয়ারে না গেলেও নির্বাচিত হতে সমস্যা হচ্ছে না বলেই কি জবাবদিহির তোয়াক্কা করা হচ্ছে না? আবার প্রশাসনিক নজরদারির ক্ষেত্রেও গাফিলতির কারণে অনিয়ম, দুর্নীতি সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে।

দুর্নীতি ও অনিয়ম বন্ধে জরুরি হলো জবাবদিহি নিশ্চিত করা। কিন্তু তা না করার কারণে এসব ঘটনা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। মাঝখান থেকে যাঁদের জন্য প্রকল্প গ্রহণ করা হয়, তাঁরা উপকার না পেয়ে বঞ্চিতই থাকেন। এ জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কঠোর নজরদারি বাড়াতে হবে। এ ধরনের অনিয়ম ও দুর্নীতি বন্ধ করতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং জেলা প্রশাসকের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।

জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধি হয়েও যিনি গরিবের অর্থ আত্মসাৎ করেছেন, তাঁর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি এ ধরনের মানুষদের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলনও জাগিয়ে তোলা দরকার।

  • বিষয়:

নিউজটি আপডেট করেছেন: স্টাফ রির্পোটার।

বাংলা নিউজ নেটওয়ার্ক ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
কমেন্ট বক্স
সুখবর দিলো মালয়েশিয়া, চালু করল কলিং ভিসা

সুখবর দিলো মালয়েশিয়া, চালু করল কলিং ভিসা