মার্কিন ফার্মাসিউটিক্যাল জায়ান্ট জনসন অ্যান্ড জনসনকে (J&J) প্রায় এক হাজার কোটি ডলার ক্ষতিপূরণ দিতে নির্দেশ দিয়েছে ক্যালিফোর্নিয়ার এক

ট্যালকম পাউডারে ক্যানসার! জনসন অ্যান্ড জনসনকে গুনতে হবে ৯৬৬ মিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণ

নিউজটি প্রতিবেদন করেছেন: নিউজ ডেস্ক।

আপলোড সময় : ৮ অক্টোবর ২০২৫, দুপুর ২:৫৪ সময় , আপডেট সময় : ৮ অক্টোবর ২০২৫, দুপুর ২:৫৪ সময়

মার্কিন ফার্মাসিউটিক্যাল জায়ান্ট জনসন অ্যান্ড জনসনকে (J&J) প্রায় এক হাজার কোটি ডলার ক্ষতিপূরণ দিতে নির্দেশ দিয়েছে ক্যালিফোর্নিয়ার এক আদালত। প্রতিষ্ঠানটির ট্যালকম পাউডার ব্যবহার করে ক্যানসারে আক্রান্ত এক নারীর পরিবারের পক্ষে এ রায় দিয়েছেন লস অ্যাঞ্জেলসের জুরি বোর্ড।


৮৮ বছর বয়সে মারা যাওয়া মার্কিন নাগরিক মে মুরের পরিবার ২০২১ সালে মামলাটি দায়ের করে। অভিযোগে বলা হয়, জনসন অ্যান্ড জনসনের ট্যালকভিত্তিক বেবি পাউডারে অ্যাসবেস্টস ফাইবার ছিল, যা তার বিরল ক্যানসার মেসোথেলিওমার কারণ হয়। আদালত সোমবারের রায়ে মুর পরিবারের জন্য ১৬ মিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণ এবং ৯৫০ মিলিয়ন ডলার শাস্তিমূলক ক্ষতিপূরণ প্রদানের আদেশ দেন।


তবে আইনি বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, আপিলের পর এই অঙ্ক কমে যেতে পারে। কারণ যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্টের নীতিমতে, শাস্তিমূলক ক্ষতিপূরণের পরিমাণ সাধারণত ক্ষতিপূরণমূল্যের নয় গুণের বেশি হতে পারে না।


রায়ের পর জনসন অ্যান্ড জনসনের বিশ্বব্যাপী লিটিগেশন বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ট এরিক হাস এক বিবৃতিতে বলেন, কোম্পানি অবিলম্বে রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবে। তিনি রায়কে ‘অত্যন্ত অন্যায্য ও অসাংবিধানিক’ বলে উল্লেখ করেন। তার ভাষায়, “বাদীপক্ষের আইনজীবীরা তথাকথিত ‘অবৈজ্ঞানিক’ যুক্তি ব্যবহার করেছেন, যা কখনোই জুরির সামনে উপস্থাপিত হওয়া উচিত ছিল না।”


প্রতিষ্ঠানটি বরাবরই দাবি করে আসছে, তাদের পণ্য নিরাপদ, এতে অ্যাসবেস্টস নেই এবং এটি ক্যানসার সৃষ্টি করে না। ২০২০ সালে প্রতিষ্ঠানটি যুক্তরাষ্ট্রে ট্যালকভিত্তিক বেবি পাউডার বিক্রি বন্ধ করে কর্নস্টার্চ-ভিত্তিক পণ্য বাজারে আনে। জানা গেছে, মেসোথেলিওমা সাধারণত অ্যাসবেস্টসের সংস্পর্শে আসার কারণে হয়।


মে মুরের পরিবারের আইনজীবী ট্রে ব্রানহাম রায়ের পর বলেন, “আমরা আশাবাদী যে জনসন অ্যান্ড জনসন অবশেষে এসব অকারণ মৃত্যুর দায় স্বীকার করবে।”


বর্তমানে জনসন অ্যান্ড জনসনের বিরুদ্ধে প্রায় ৬৭ হাজার মামলা চলমান, যেখানে অভিযোগ করা হয়েছে তাদের বেবি পাউডারসহ ট্যালকজাত পণ্য ব্যবহারের পর ভুক্তভোগীরা ক্যানসারে আক্রান্ত হয়েছেন। যদিও এই মামলাগুলোর বেশিরভাগই ওভারিয়ান ক্যানসার সংক্রান্ত, মেসোথেলিওমা সংক্রান্ত মামলা তুলনামূলকভাবে কম।


জনসন অ্যান্ড জনসন দেউলিয়া ঘোষণার মাধ্যমে এসব মামলা নিষ্পত্তির চেষ্টা করেছিল, কিন্তু ফেডারেল আদালত তিনবারই সে প্রস্তাব খারিজ করে দেয়। সর্বশেষ দেউলিয়া প্রস্তাবে মেসোথেলিওমা সংক্রান্ত মামলা অন্তর্ভুক্ত ছিল না। যদিও কোম্পানি কিছু মামলা আদালতের বাইরে নিষ্পত্তি করেছে, তবুও সামগ্রিকভাবে কোনো জাতীয় পর্যায়ের সমঝোতা হয়নি।


গত এক বছরে মেসোথেলিওমা মামলায় জনসন অ্যান্ড জনসনের বিরুদ্ধে একাধিক বড় রায় এসেছে, যার মধ্যে সোমবারের এই রায়টি অন্যতম বৃহৎ। যদিও কিছু মামলায় কোম্পানি জিততেও সক্ষম হয়েছে। সম্প্রতি সাউথ ক্যারোলিনায় এক জুরি জনসন অ্যান্ড জনসনকে দায়মুক্ত ঘোষণা করেছে।


তবুও প্রতিষ্ঠানটি একাধিক মামলার ক্ষতিপূরণের অঙ্ক আপিলের মাধ্যমে কমাতে সক্ষম হয়েছে। যেমন, ওরেগনের এক মামলায় রাজ্য আদালত জনসন অ্যান্ড জনসনের আবেদন মঞ্জুর করে ২৬০ মিলিয়ন ডলারের রায় বাতিল করে নতুন বিচারের নির্দেশ দিয়েছে।


এই রায় জনসন অ্যান্ড জনসনের দীর্ঘমেয়াদি আইনি লড়াইয়ে নতুন মাত্রা যোগ করেছে, যা প্রতিষ্ঠানটির জন্য বিশ্বজুড়ে বিশ্বাসযোগ্যতার বড় পরীক্ষায় পরিণত হতে পারে।

সম্পাদকীয় :

সম্পাদকঃ মো: ফারুক হোসেইন,

এক্সিকিউটিভ এডিটরঃ ড. আব্দুর রহিম খান,

প্রকাশকঃ মো: মতিউর রহমান।


অফিস :

অফিস : রুপায়ন জেড. আর প্লাজা (৯তলা), প্লট- ৪৬,রোড নং- ৯/এ, সাতমসজিদ রোড, ধানমন্ডি, ঢাকা- ১২০৯।

ইমেইল : info@banglann.com.bd, banglanewsnetwork@gmail.com

মোবাইল : +৮৮ ০২ ২২২২৪৬৯১৮, ০২২২২২৪৬৪৪৯