
টাঙ্গাইল জেলাকে ঢাকা বিভাগ থেকে কেটে ময়মনসিংহ বিভাগে যুক্ত করার প্রস্তাবের প্রতিবাদে এবং ঢাকা বিভাগে বহাল রাখার দাবিতে টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু ও ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করা হয়েছে।
সোমবার (১৩ অক্টোবর) সকাল ১১টার দিকে যমুনা সেতুর পূর্ব প্রান্তের গোলচত্বর এলাকায় মহাসড়ক অবরোধ করেন বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা। এতে মহাসড়কের উভয়পাশে অন্তত ছয় কিলোমিটার এলাকায় দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। প্রায় দেড় ঘণ্টা পর অবরোধ তুলে নিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। এদিকে সকাল থেকে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা মহাসড়কের যমুনা সেতু পূর্ব গোলচত্বর অংশে অবস্থান নিয়ে মহাসড়ক অবরোধ শুরু করেন। অবরোধের কারণে ঢাকা ও উত্তরবঙ্গগামী শত শত যানবাহন আটকে পড়ে। পরে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে আলোচনা স্বাপেক্ষে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে আন্দোলনকারীরা অবরোধ তুলে নেন।
জানা যায়, রবিবার (১২ অক্টোবর) সকাল থেকে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পরে—টাঙ্গাইল জেলাকে ঢাকা বিভাগ থেকে কেটে ময়মনসিংহ বিভাগে যুক্ত করা হয়েছে।
তবে টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক শরীফা হক জানিয়েছেন, টাঙ্গাইল জেলাকে ঢাকা বিভাগ থেকে কেটে ময়মনসিংহ বিভাগে যুক্ত করার কোনো তথ্য সরকারিভাবে পাননি।
এদিকে, টাঙ্গাইল জেলাকে ঢাকা বিভাগ থেকে কেটে ময়মনসিংহ বিভাগে যুক্ত করার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন জেলাবাসী। রবিবার (১২ অক্টোবর) থেকেই জেলাবাসী ফেসবুকের পোস্টের মাধ্যমে প্রতিবাদ জানান। জেলার কালিহাতী, ভূঞাপুরসহ বিভিন্ন উপজেলা থেকে ছাত্র-জনতা মিছিল সহকারে এসে দাবিতে আদায়ের লক্ষ্যে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন।
মহাসড়কের উভয়পাশে উত্তরবঙ্গ ও ঢাকাগামী যানবাহন আটকে পরে দুর্ভোগে পড়েন যাত্রীরা। আন্দোলনকারীরা বলেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। টাঙ্গাইল নিয়ে টানাহেঁচড়া চলবে না। টাঙ্গাইল যদি ঢাকা বিভাগে না থাকে। তাহলে একে স্বাধীন বিভাগ হিসেবে ঘোষণা করতে হবে।
অন্যথায় আরো কঠোর আন্দোলনের হুমকি দেন।
কালিহাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খায়রুল ইসলাম জানান, টাঙ্গাইল জেলাকে ময়মনসিংহ বিভাগে প্রস্তাবনার বিষয়টি লিখিত কোনো চিঠি বা এ ধরনের কোনো তথ্য আমরা সরকারিভাবে পাইনি। আন্দোলনকারীদের দাবিগুলো লিখিতভাবে জমার আহ্বান করা হয়েছে। তাদের লিখিত দাবিগুলোর বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হবে।
উল্লেখ্য, বিগত ২০১৪ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর ময়মনসিংহকে দেশের অষ্টম বিভাগ হিসেবে ঘোষণার সময়ই টাঙ্গাইলকে ওই বিভাগে যুক্ত করার প্রস্তাব ছিল। সে সময়ও টাঙ্গাইলের মানুষ গণস্বাক্ষর, মানববন্ধন ও বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে প্রতিবাদ করেন। বর্তমানে বিষয়টি আবার আলোচনায় আসায় জেলার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ ক্ষোভ প্রকাশ করছেন।