ঢাকা | |

চাকসুতে শিবিরের ভিপি প্রার্থীর বিপক্ষে যত অভিযোগ

ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের একচ্ছত্র আধিপত্য অবসান ঘটে। এতে একটি
  • আপলোড সময় : ১৫ অক্টোবর ২০২৫, সকাল ৯:২১ সময়
  • আপডেট সময় : ১৫ অক্টোবর ২০২৫, সকাল ৯:২১ সময়
চাকসুতে শিবিরের ভিপি প্রার্থীর বিপক্ষে যত অভিযোগ ছবি : সংগৃহীত

ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের একচ্ছত্র আধিপত্য অবসান ঘটে। এতে একটি শান্তিপূর্ণ ও শিক্ষা-বান্ধব পরিবেশ ফিরে পাওয়ার আশা জাগে শিক্ষার্থীদের মধ্যে। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই ফের বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠে। ক্যাম্পাসে সহিংসতা, হল দখল এবং 'মব জাস্টিসের' মতো বেশ কয়েকটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে।


এসব ঘটনার বেশিরভাগের পেছনে ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা জড়িত বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের একটি বড় অংশের।

​অভিযোগ রয়েছে ছাত্রশিবির মনোনীত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচনে ভিপি (সহ-সভাপতি) প্রার্থী ইব্রাহিম রনি, 'সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলন' ব্যানারে ক্যাম্পাসে নিজের প্রভাব বিস্তার করছেন। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ১১ আগস্ট বিকালে এ এফ রহমান হলের সামনে দাউদ সালমান নামে মানসিক ভারসাম্যহীন এক যুবকে আটক করে রনির অনুসারীরা। তার হাতে থাকা একটি খেলনা পিস্তল সদৃশ লাইটারকে “লোডেড পিস্তল” বলে দাবি করে গুজব ছড়ানো হয়।


এরপর ওই যুবককে বেঁধে রেখে শারীরিক ও মানসিকভাবে হেনস্থা করা হয়। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, একে শিবিরের একটি “মবজাস্টিস” প্রচেষ্টা, যার মাধ্যমে তারা ক্যাম্পাসে ভয়ভীতি ছড়ানোর কৌশল নিয়েছে বলে। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, ৫ আগস্টের পর ছাত্রলীগ ক্যাম্পাস ছেড়ে গেলে রনির নেতৃত্বে শিবির ক্যাম্পাসের দখল নেয়। প্রথমে তারা হলগুলো টার্গেট করে, সিলগালাকৃত রুম ভেঙে ফেলে এবং ছাত্রলীগের রেখে যাওয়া দেশীয় অস্ত্র নিজেদের দখলে নেয়।


এছাড়া হলের সাধারণ শিক্ষার্থীদের জিনিসপত্র লুট করে এবং প্রশাসনের সহায়তায় নিজেদের কর্মীদের হলের সিট দেয়। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হলে কমপক্ষে দুই শতাধিক শিবির কর্মী অবস্থান করছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

শিক্ষার্থীরা জানান, আগস্টের পর থেকে ক্যাম্পাসে অন্তত ১০টি গুপ্ত হামলার ঘটনা ঘটেছে। ভুক্তভোগীদের দাবি, এসব হামলার সঙ্গে শিবিরের সম্পৃক্ততা থাকলেও প্রশাসন নির্লিপ্ত থেকেছে। এছাড়া সমাবর্তনের দিন এক শিক্ষার্থীকে কুপিয়ে আহত করা হয়, তবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো তদন্ত হয়নি।


জানা গেছে, গত ৬ ফেব্রুয়ারি বিজয় ২৪ হলে শিবিরের নেতাকর্মীরা মব তৈরি করে হলে প্রবেশ করে। তারা হলে থাকা নৌকার প্রতীক ভাঙতে গেলে ছাত্রীদের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে। এ সময় জামাতপন্থী প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা ছাত্রীদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করেন বলে অভিযোগ রয়েছে।


পরে প্রশাসন একতরফাভাবে ১০ জন ছাত্রীকে বহিষ্কার করে, যার মধ্যে সুমাইয়া শিকদার আদালতে রিট করেন। শিক্ষার্থীদের দাবি, প্রশাসনের এই সিদ্ধান্ত ছিল অন্যায্য ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।


শিক্ষার্থীরা আরো অভিযোগ করেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর, সহকারী প্রক্টর ও প্রো-ভিসিরা সবাই কোনো না কোনোভাবে শিবিরের সাবেক কর্মী ছিলেন। তারা ক্যাম্পাসে শিবিরকে নানা সুবিধা দিয়ে যাচ্ছেন— যেমন অডিটোরিয়াম ব্যবহারের অনুমতি, বাণিজ্যিক স্পটের দখল এবং খাবার দোকান পরিচালনার সুযোগ। 


শিক্ষার্থীরা বলছেন, রনি ও তার অনুসারীরা “সাধারণ শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ের” নামে একটি ছদ্ম আন্দোলনের মাধ্যমে ক্যাম্পাস নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা গুজব ছড়িয়ে প্রতিপক্ষ সংগঠনগুলোকে হেয় করা হচ্ছে।


একজন শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “এভাবে একটি সংগঠন ক্যাম্পাস নিয়ন্ত্রণে নিয়ে প্রশাসন নীরব থাকা উদ্বেগজনক। এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্য ও নিরাপত্তার জন্য মারাত্মক হুমকি।”

  • বিষয়:

নিউজটি আপডেট করেছেন: নিউজ ডেস্ক।

বাংলা নিউজ নেটওয়ার্ক ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
কমেন্ট বক্স
৪ ইসরায়েলি জিম্মির মরদেহ ফেরত দিয়েছে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন

৪ ইসরায়েলি জিম্মির মরদেহ ফেরত দিয়েছে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন