ঢাকা | |

চট্টগ্রাম বন্দর বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি

চট্টগ্রাম বন্দর বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন পোর্ট ইউজার্স ফোরামের নেতারা। চট্টগ্রাম বন্দরে বিভিন্ন সেবায় অযৌক্তিক ও অতিরিক্ত
  • আপলোড সময় : ১৮ অক্টোবর ২০২৫, বিকাল ৫:৩৮ সময়
  • আপডেট সময় : ১৮ অক্টোবর ২০২৫, বিকাল ৫:৩৮ সময়
চট্টগ্রাম বন্দর বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি ছবি : সংগৃহীত

চট্টগ্রাম বন্দর বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন পোর্ট ইউজার্স ফোরামের নেতারা। চট্টগ্রাম বন্দরে বিভিন্ন সেবায় অযৌক্তিক ও অতিরিক্ত ট্যারিফ আরোপের প্রতিবাদে পোর্ট ইউজার্স ফোরাম আয়োজিত প্রতিবাদ সভায় এ হুঁশিয়ারি দেন ফোরামের নেতারা। তারা বলেন, এক সপ্তাহের মধ্যে নতুন ট্যারিফ সমস্যার সমাধান না হলে চট্টগ্রাম বন্দর বন্ধ করে দেওয়া হবে। 


শনিবার (১৮ অক্টোবর) দুপুরে নগরীর একটি কনভেনশন হলে পোর্ট ইউজার্স ফোরামের প্রতিবাদ সভায় এ হুমকি দেন ব্যবসায়ীরা।


ফোরামের সভাপতি আমীর হুমায়ুন মাহমুদ চৌধুরী সভাপতিত্বে সভায় স্বাগত বক্তব্যে এফবিসিসিআইয়ের সাবেক পরিচালক এম এ সালাম বলেন, ‘ব্যবসায়ীরা দেশের অর্থনীতির চালিকাশক্তি। ৮৫ শতাংশ আমদানি-রপ্তানি চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে হয়। বন্দরের নতুন ট্যারিফে ব্যবসায়ীরা অনিশ্চয়তায় ভুগছেন। আমি বিশ্বাস করি, আমরা একসঙ্গে না বললে সমাধান হবে না।


চট্টগ্রাম বন্দর একটি সেবাধর্মী সংস্থা এই সেবাকেন্দ্র লোকসানে নেই। আড়াই-তিন হাজার কোটি টাকা লাভ করেছে। তাহলে চট্টগ্রাম বন্দর নিয়ে কেন এত কারসাজি। ট্রেইলার ধর্মঘট শুরু হয়েছে, আমাদের কনটেইনার যাবে না।

বন্দরের ট্যারিফ শিডিউল পুনর্নির্ধারণ করার দাবি জানাই।’

বিজিএমইএর সাবেক সহসভাপতি এস এম আবু তৈয়বের সঞ্চালনায় প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে পোর্ট ইউজার্স ফোরাম নেতারা তাদের বক্তব্যে বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরেন।


বিজিএমইএর পরিচালক এমডিএম মহিউদ্দিন বলেন, বন্দরের নতুন ট্যারিফে ব্যবসায়ীরা প্রাথমিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, পরে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা করে যৌক্তিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার অনুরোধ জানাই। আমেরিকার ট্যারিফ নিয়ে সুখে নেই আমরা।


এর মধ্যে বন্দরের ট্যারিফ বৃদ্ধি কাম্য নয়।

শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের নজরুল ইসলাম বলেন, আমরা অত্যন্ত কনসার্ন। বন্দর কোনো কোনো ক্ষেত্র ৪৪০ শতাংশ ট্যারিফ, চার্জ বাড়িয়েছে। পোর্ট লিমিট বাড়ানোর সময় ট্যারিফ বাড়ানো হয়েছে। পাইলটিং, পোর্ট ডিউজ দিতে হচ্ছে। কস্ট বেইজড ট্যারিফ হওয়া উচিত। শিপ ওনার চার্জ বাড়িয়ে দেবে। শিল্প বাণিজ্য ক্ষেত্রে অচলাবস্থা তৈরি হবে। আমাদের শেষ ভরসা প্রফেসর ইউনূস। ট্যারিফ বাড়াতে হলে স্টেক হোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা করে বাড়াতে হবে।


বন্দর ট্রাক মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির সোহেল বলেন, বন্দরের নতুন ট্যারিফ শিডিউলে ৫৭ টাকার গেইট পাস ২৩০ টাকা করা হয়েছে। আমাদের ১২ হাজার গাড়ি আছে বন্দরে। ২-৩ হাজার টাকায় ট্রিপ মেরে ৫০০ টাকা আয় হয় না, আমার ওপর ৩০ হাজার টাকা আয়কর। 


চট্টগ্রাম প্রাইম মুভার ও ফ্লাটবেড ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ হোসেন বলেন, আমাদের ১৫ হাজার গাড়ি, ১০ হাজার শ্রমিক। বন্দর টার্মিনাল দিচ্ছে না ১৫ বছর বলার পরও। বন্দরে চালকদের ওয়াশ রুম, ক্যান্টিন নেই। তিন ধরনের ট্যাক্স দিই। এখন নতুন করে বন্দর ৫৭ টাকার পাসের ফি ২৩০ টাকা করেছে। একজন মানুষ কতবার ট্যাক্স দেবে। এটা সংস্কার করা দরকার।


সঞ্চালক এস এম আবু তৈয়ব বলেন, ট্রাম্পের ট্যারিফে পৃথিবীতে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। যে সরকার আমেরিকা গিয়ে ট্যারিফ কমায় সেই সরকার বন্দরে ট্যারিফ বাড়ায়। এতে দেশের ব্যবসায়ীরা উদ্বিগ্ন। এ ট্যারিফ অযৌক্তিক মনে করি। ইতিমধ্যে এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টাকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।


বাফার পরিচালক অমিয় শঙ্কর বর্মণ বলেন, বন্দর ও অফডক একসঙ্গে ট্যারিফ, চার্জ বাড়িয়েছে তা অসহনীয়। কোনো ক্ষেত্রে ২০০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে।  


সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সাইফুল আলম বলেন, ব্যবসায়ীদের জন্য দুসংবাদ। মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা। বিদেশে ট্যারিফ কমাতে অন্তর্বর্তী সরকার সফল হয়েছে, ধন্যবাদ জানাই। বন্দর অর্থনীতির লাইফ লাইন। এটা শেষ করতে নান ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। আমদানি রপ্তানিকারকের ব্যথা আমরা জানি। ১২ টাকার ফি ১১৫ টাকা করা হয়েছে। ব্যবসায়ীদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে যাবে। নতুন ট্যারিফ কমানো না গেলে ব্যবসায়ীদের যাওয়ার জায়গা থাকবে না। সিঅ্যান্ডএফের ১৩ হাজার শ্রমিক কর্মচারী এ খরচের বোঝা নিয়ে কাজ করতে অপারগ।


সভায় বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম চেম্বারের সাবেক পরিচালক আমিরুল হক, সাইফুল ইসলাম, শিপিং এজেন্টের শাহেদ সরওয়ার, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সদস্য সচিব জাহিদুল করিম কচি, শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক চেয়ারম্যান ড. পারভেজ আকতার, ডব্লিউটিসির সভাপতি মোহাম্মদ শফি, বিপণি বিতান ব্যবসায়ী সমিতির শারুদ নিজাম, টায়ার টিউব ইমপোর্টারস ও ডিলার অ্যাসোসিয়েশনের মঈনুদ্দিন আহমেদ মিন্টু প্রমুখ।

  • বিষয়:

নিউজটি আপডেট করেছেন: নিউজ ডেস্ক।

বাংলা নিউজ নেটওয়ার্ক ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
কমেন্ট বক্স